ইরাকে তখন উদ্ভূত বিরাজমান বিপদজনক ভয়ংকর পরিস্থিতির মাঝে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পথ অতি ক্রম করে কাতারের দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে যেন কিছুটা স্বস্তি পেল।নিরাপত্তার খাতিরে তাদের সঙ্গে তখন সদা জাগ্রত সশস্ত্র সিকিউরিটি। ইরাকে তখন সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি থাকলেও কোম্পানির দায়বদ্ধতায় ক্রিউদের জন্য ফুল সিকিউরিটি থাকায় ছেলের মনে তখন ছিল না কোন রকমের ভয় এবং ভীতি।যদিও ইরাকের বিভিন্ন প্রান্তে তখন চলছে এক অরাজকতায় মুহুর্মুহু বীভৎস গোলাগুলি নিক্ষেপ।তবে সঙ্গে সশস্ত্র সিকিউরিটি থাকায় নির্দ্বিধায় প্রবেশ করলো এয়ারপোর্ট লাউঞ্জের মধ্যে।তারপর অধীর আগ্রহে পরবর্তী ফ্লাইটের নির্ধারিত সময়ের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর অবশেষে উঠে পড়ল ডাইরেক্ট নির্দিষ্ট কলকাতার ফ্লাইটে।চরম উৎকণ্ঠা কাটিয়ে আকাশ পথে উড়ে ৪ ঘন্টা ৪০ মিনিটে এসে অবতরণ করলো কলকাতা বিমান বন্দরে।দীর্ঘ জার্নির শেষে বাড়ি আসার জন্য যেন আর তর সইছে না।সোজা প্রি পেইড ট্যাক্সি ধরে এসে পৌঁছাল বাড়িতে।প্রচন্ড দুশ্চিন্তার মাঝে ঘরের ছেলে ঘরে আসায় আমরা পেলাম স্বস্তি!সত্যি কথা বলতে কি-এই সময়ে ইরাকের যত্রতত্র সংঘাত ও সংঘর্ষের কথা শুনে আমরা সর্বদাই থেকেছি ভীষণ চিন্তিত।বিভিন্ন সময়ে টিভির পর্দায় সিনেমার মতো কিছু কিছু ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে আমরা হয়েছি শিহরিত!চতুর্দিকে দেখেছি তখন অহরহ বিস্ফোরনের ধ্বংসস্তুপ।বিভিন্ন সময় শুনেছি বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে নানা রকম অপহরণ।কখনো বা বীভৎস গুপ্তহত্যা-কখনো বা প্রকাশ্যে—!এমনই পরিস্থিতির মাঝে বাড়ি এসে পৌঁছাবার পর সেই ভয়ংকর দুশ্চিন্তা থেকে হলাম মুক্ত।ঘরের ছেলে ঘরে আসায় তখন আনন্দ ফুর্তির মধ্যে কাটতে লাগলো দিনগুলি। এবার বাড়ি আসার পর দিন সকালে আমার হাতে তুলে দিল একটি পার্স।দেখলাম তাতে রয়েছে বিভিন্ন দেশের কারেন্সি।যখনই যে দেশে গিয়েছে সুযোগ মতো শখে সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছে সেখানকার কারেন্সি।যে দেশে যখন যেমন পেরেছে তখন তা সংগ্রহ করেছে।সংগৃহীত সেই সমস্ত কারেন্সির নোট ও কয়েন আলাদা আলাদা করে প্লাস্টিকের ফয়েলে সযত্নে গুছিয়ে রেখে দিল।সব মিলিয়ে দেখলাম প্রায় ৫০টি দেশের কারেন্সি সংগ্রহ করেছে। বাড়ি এলেও তার মাঝেও এসেছে কোম্পানি থেকে জয়েনিংয়ের জন্য কল।কিন্তু দীর্ঘদিন সমুদ্রের মাঝে একঘেয়েমি নিঃসঙ্গ জীবনযাত্রার পর উপস্থিত পরিবর্তনে ভাবলো কটা মাস বাড়িতে সবার মাঝে আনন্দে কাটিয়ে তবেই আবার চাকরিতে জয়েন করবে।কিন্তু এমতাবস্থার মাঝেও বারবার কোম্পানির কল আসতে থাকায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে।তার মাঝেই একটা নতুন কোম্পানি থেকে আর্জেন্ট কল আসায় সেখানে অন লাইনে ইন্টারভিউর পর উচ্চ স্যালারির কথা চিন্তা করে কোম্পানির সাথে সহমত পোষণ করে ডাকযোগে PASSPORT ও CDC নভী মুম্বাইয়ের নেরুলে নতুন অফিসের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়।ওদিকে ছেলে সবেমাত্র V SHIP’S কোম্পানি থেকে রিলিভার নিয়ে ঘরে ফিরেছে তাই নতুন কোম্পানি যখন V SHIP’S থেকে তার সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে চাইলো তখনই V SHIP’S এর অফিস থেকে আসে ছেলের কাছে জরুরী ফোন। অবিলম্বেই তার PASSPORT ও CDC অফিসে জমা করার নির্দেশ দেয়।এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে নতুন অফিসের সাথে যোগাযোগ করে তার সমস্ত ডকুমেন্টস ফেরত চাইলে ডাকযোগে পাঠাবার ব্যবস্থা করবে বলে জানায়।কিন্তু এ কথা বললেও ছেলে তাতে আশ্বস্ত হতে পারলো না।তাই বাধ্য হয়ে সেসব হাতে হাতে ফেরত আনার জন্য ১৫ ই মে ২০১৯ হাওড়া থেকে দুরন্ত এক্সপ্রেসে মুম্বাই রওনা হয়ে যায়।প্রথমে গিয়ে উঠলো নেরুলে অফিসের কাছেই একটা হোটেলে।একটু ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে গেল নতুন অফিসে।নির্দিষ্ট সমস্ত ডকুমেন্টস হাতে পেতে সন্ধ্যা হয়ে গেল তাই ঐ দিন আর V SHIP’S এর অফিসে যাওয়া সম্ভব হলো না।তাই পরদিন সকালে নির্দিষ্ট ডকুমেন্টস V SHIP’S অফিসে গিয়ে জমা করে আসে।আসলে দীর্ঘদিন সুনামের সাথে এই কোম্পানিতে কাজ করার সুবাদে কোম্পানি তাকে কিছুতেই ছাড়তে চাইলো না।এই সময়ে মুম্বাইতে উপস্থিত কাজগুলি সম্পন্ন করার পর বাড়ি ফেরার জন্য অনেক চেষ্টাতেও ট্রেনের কোন টিকিট পাওয়া গেল না।এমতাবস্থায় উপায়ন্তর না দেখে বাধ্য হয়ে ফ্লাইটের টিকিট কাটতে হয়।এবং সেই মতো ১৯শে মে ২০১৯ রাত আড়াইটায় INDIGO এর ফ্লাইটে কলকাতা বিমান বন্দরে এসে পৌঁছায়।ওদিকে V SHIP’S কোম্পানিতে তার ডকুমেন্টস জমা করে আসবার পর তার জয়নিং এর জন্য সকল রকম প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল। PASSPORT ও CDC সহ সকল ডকুমেন্টস অফিসে জমা করার সময়ে কোম্পানির সাথে ছেলে কথা বলে।আগে বিভিন্ন সময়ে বিদেশ যাওয়ার প্রাক্কালে কলকাতা থেকে ভায়া মুম্বাই হয়ে যেতে গিয়ে বিভিন্ন রকম ধকল পোহাতে হয়েছে।তাই সে এবার ডাইরেক্ট কলকাতা থেকে দুবাইয়ের টিকিটের জন্য অনুরোধ জানায়।সেই প্রত্যাশা মতো টিকিট এবং ভিসা তৈরি হবার সংবাদ পেলেই ছেলে কলকাতা অফিসে গিয়ে তা সংগ্রহ করে নিয়ে আসে।সেই মতো ১২ই জুলাই ২০১৯ ভোর ৬ টায় আগের দিনে বুকিং করা একটা মারুতি ভ্যান নিয়ে আমরা দমদম বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলাম।এবারের এই ফ্লাইটটা ছিল আন্তর্জাতিক তাই নির্দিষ্ট সময়ের চার ঘণ্টা আগেই বোর্ডিংয়ের জন্য এয়ারপোর্টে পৌঁছাতেই হবে।সেই মতো ড্রাইভার আমাদের পৌঁছিয়ে দিল ইন্টারন্যাশানাল টার্মিনালের দুই নম্বর গেটে।বোর্ডিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট সময় হয়ে যাওয়ায় বাইরে আর অপেক্ষা না করেই লাগেজ নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করল।তার হাতে তখন লাগেজ আর মাথায় আমাদের সকলের আশীর্বাদ নিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল নির্দিষ্ট কাউন্টারের দিকে।শুরু হল চেকিং পর্ব। ধাপে ধাপে সম্মুখে এগিয়ে যেতে লাগলো।বেল্টে লাগেজ দিয়ে এগিয়ে গেল বডি চেকিং এর জন্য। আমরা বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁচের ভেতর দিয়ে সব প্রত্যক্ষ করছি।ছেলে আমাদের দেখতে পেয়ে ফোনে বাড়ি চলে যেতে বললো।সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে উড়ান আকাশে উড়ে গেলে আমরা চলে এলাম বাড়ি। নির্ধারিত সময়েই পৌঁছে গেল দুবাই এয়ারপোর্ট।তখন সেখানে উপস্থিত ছিল কোম্পানির নির্ধারিত এজেন্ট।সেখান থেকে সকল ক্রিউদের রিসিভ করে তাদের নিয়ে সোজা চলে গেল হোটেলে।সেখানে রাত্রি যাপনের পর ভোর ৪টায় মোট সাতজন ক্রিউকে নিয়ে এজেন্ট পৌঁছে যায় পোর্টে ।সেখানে ইমিগ্রেশনের কাজ সম্পন্ন হবার পর ওরা ETHIOPIA এর শীপ MV BAHIRDAR এ গিয়ে পৌঁছানোর পর পরই শুরু হলো তাদের নির্ধারিত যাত্রা।রাত্রে ফোনে জানতে পারলাম শীপ লম্বা চওড়ায় খুবই বড় এবং খুব উন্নত মানের।গ্যালিতে পৌঁছেই সে নিজে নিজের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে কাজ শুরু করে দেয়।তখন ওদের সবাইর সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করে বিধাতার কাছে জানালাম প্রার্থনা! এই সময়ে বিদেশে ছেলের মোবাইলের সিম চালু রাখার জন্য আন্তর্জাতিক রোমিং রেটে মাসে মাসে কলকাতা থেকে রিচার্জ করে যাই যাতে আমরা তার সাথে যোগাযোগ করতে পারি নির্ধারিত বৈদেশিক চার্জ ছাড়া।এমনি করে চলতে থাকে বিভিন্ন দেশে চলন্তাবস্থায় কথাবার্তা।২৯ শে আগস্ট ২০১৯ দুপুরে তাদের শীপ ইয়েমিনে গিয়ে পৌঁছায়।পরদিন ইয়েমেন থেকে অন লাইনে কলকাতায় ডেলিভারির জন্য চারটি ফ্রগ জামা বুকিং করে।দুটি একমাত্র ভাগ্নী শ্রীঅংশীর জন্য আর দুটি মামনির জন্য।ওরা দুইজন সমবয়সী। বয়সে মাত্র ১৫ দিনের ছোট বড়।আমরা সহ ছেলেও বৌমা যখনই কিছু কেনে তখন ওদের দুজনের জন্যই নেয়। কখনো ভূলেও মেয়ে ও ভাগ্নিকে দুই দৃষ্টিতে দ্যাখেনা।সদ্য বাবা হয়ে ছোট্ট মামনিকে রেখে চাকরিরত অবস্থায় বিদেশে থেকে থেকে ক্রমাগত পিতৃত্বের স্নেহ থেকে বঞ্চিতাবস্থায় মন হয়ে উঠেছে উতলা।আসছে ২৪ শে অক্টোবর তার শুভ জন্মদিন উপলক্ষে উপস্থিত থাকতে না পারার বেদনা লাঘবের জন্যই এই পার্সেলের কথাই ভাবে।তাছাড়া তখনই ছিল দুর্গা পূজার সময়।এই সময়ে আমরা বাড়িতে সকলের জন্য জামাকাপড় কেনাকাটা করলেও সেই সুদূরে থাকায় তার মনটাও ভালো লাগছিল না।তাই মন চাওয়াতে পার্সেলটা করে ফেলল।নির্দিষ্ট সময়ে উক্ত পার্সেল বাড়িতে পৌঁছে গেলে তাকে ফোন করে জানিয়ে দিই।তাতে সে পেল অনেকটা আনন্দ। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ নতুন বাজার মোড়ে পঙ্কজ দার সঙ্গে দেখা হলো।উনি ছেলের প্রাইভেট টিউটর ছিলেন। ক্যাটারিং নিয়ে ডিপ্লোমা করার প্রাক্কালে তাঁর অবদান ছেলের কাছে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।তাঁর মাধ্যমেই যোগাযোগ হয় বারাসাত ST.JOHN BOSCO CATARING SCHOOL এর সঙ্গে।তখন সেখানকার প্রিন্সিপাল ছিলেন মিঃ দীপক হালদার।তিনি ছিলেন পঙ্কজদার অন্তরঙ্গ বন্ধু।সেই সূত্রে ছেলে ওই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে কমপ্লিট করলো ক্যাটারিং ডিপ্লোমা কোর্স। নতুন বাজারে যখন তাঁর সঙ্গে দেখা হল তখন আমাদের দুইজনের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ কথাবার্তা হয়। উনাকে তখন খুব খুশি ও উৎফুল্ল মনে হল।কথাচ্ছলে ব্যক্ত করলেন-গতকাল ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস উপলক্ষে সুদীপ তাঁকে ইয়েমেন থেকে ফোন ক’রে শিক্ষক দিবসের শ্রদ্ধা জানায়।ওরা তখন গভীর সমুদ্রের মাঝে।মোবাইলের টাওয়ার নেই তাতে কি?সে ক্যাপ্টেনের কাছ থেকে স্পেশাল পারমিশন নিয়ে স্যাটেলাইট ফোন থেকে ফোন করল তাঁকে।কথাচ্ছলে তিনি বললেন ১৪ বছর আগে যখন প্রথম বিদেশে গিয়েছিল তখনকার একটা ৫ই সেপ্টেম্বরের দিনেও কাতারের গভীর সমুদ্র থেকে ঠিক এই একই ভাবে রাত সাড়ে এগারোটায় প্রথম করেছিল ফোন।রাতের ডিনার সেরে একটা বই হাতে নিয়ে পড়বার জন্য সবে চেয়ারে এসে বসেছেন ঠিক তখনই ইন্টারন্যাশনাল ফোন পেয়ে প্রথমে একটু অবাকও হলেন বটে!পরে যখন বুঝতে পারলেন সেদিনের তাঁর ছাত্র সুদিপ ফোন করেছে তখন প্রায় আধা মিনিট তার কর্তব্য জ্ঞানের কথা ভেবে স্তম্ভিত হয়ে গেলেন।সেদিনের মাস্টার মশাইয়ের কথায় প্রকাশ করলেন-“আমি এত ছাত্র ছাত্রীকে শিক্ষা দিয়েছি,অনেকেই আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চাকুরিরত এবং প্রতিষ্ঠিত কিন্তু সুদিপের মতো আজ পর্যন্ত এমন কর্তব্য পরায়ন ছেলে আর দ্বিতীয় কাউকে খুঁজে পাইনি–।”চেষ্টা ও ইচ্ছা থাকলে সবই করা যায়।ছেলেও তাই করেছে।এমনিতে ভারতের সাথে ইয়েমেনের সময় আড়াই ঘণ্টা পিছিয়ে।সেখানে রাত দশটা বাজলে ভারতে রাত সাড়ে বারোটা।তিনি আমায় একটু গর্ব করেই ব্যক্ত করলেন-এত বছর সমুদ্রে চাকরিরত অবস্থায় শুধু দুই বছর এই শিক্ষক দিবসে তার কোন ফোন পাননি।হয়তো নিশ্চয়ই অনিবার্য অসুবিধার জন্য যোগাযোগ করতে পারেনি। তাছাড়া প্রতিটি বছরই এই দিনে যত রাতই হোক কেন, যেকোনো অবস্থায় থাকুক না কেন,সে করেছে তাঁকে ফোন।অনেক ছাত্র-ছাত্রী ক্যারিয়ার গড়ে জীবনে এখন প্রতিষ্ঠিত।জীবন প্রবাহের স্রোতে এই কর্তব্য জ্ঞান আজ যেন বিলুপ্তির পথে।ক্যারিয়ার জীবনে প্রবেশ করে বিদেশে সমুদ্রের মাঝে থেকেও এই আদর্শ কর্তব্য জ্ঞানের বিচ্যুতি তার কখনোই ঘটেনি।আজও নয়।সকাল থেকে এই পর্যন্ত এইভাবে অন্য কেউ তাঁকে শ্রদ্ধা জানায়নি।তাই তাকে নিয়ে মাস্টার মশাইয়ের একটু গর্বও হয়।সামনা সামনি তাঁর মুখে এই কথাগুলি শুনে বাবা হয়ে আমার গর্বে বুক ভরে উঠছিল।শুধু বললাম,এই শিক্ষা শুধু আমার একার নয় আপনারও।তাই আশীর্বাদ করবেন যেন জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে! আপনাদের দশজনেরই আশীর্বাদ হোক ওর চলার পথের একমাত্র পাথেয়–!সমুদ্রে চাকুরীরত অবস্থায় ছেলের আন্তরিক সহানুভূতির প্রসঙ্গে অনেক বন্ধুবান্ধবদের গার্জিয়ানের কাছ থেকে শুনতে পেয়েছি তার উদার মানসিকতা ও সহানুভূতির প্রশংসা।দেখেছি অনেকেই তাকে পুত্র স্নেহে সমাদর করতেন।বন্ধু এমনকি বান্ধবীদের বাড়িতে তাদের নিজস্ব শুভ অনুষ্ঠানেও তাকে পেয়েছে একদম বাড়ির ছেলে হিসাবে।বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাজানো-গোছানো এমনকি পরিবেশনেও কখনও দেখা যায়নি তার অনীহা।তার ওপর দায়িত্ব দিয়ে অনেকেই থেকেছেন নিশ্চিন্তে।অনেকেই অকপটে স্বীকার করেছেন তার উদার মানসিকতার কথা।উপস্থিত বিপদ আপদ ও অসুবিধার মাঝে তাকে অনেকেই পেয়েছে ছায়ার মত।স্বার্থপরতার যুগে স্বার্থান্বেষী অনেকেরই স্বার্থ ফুরিয়ে গেলে ভুলে যায় ফেলে আসা দিনগুলির কথা–।কিন্তু যারা অকৃতজ্ঞ তারা কিছুতেই কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে চায় না।যদিও কেউ এমনটা করতে চায় তখন অনেকের কাছেই তা হয়ে ওঠে বড্ড গাত্রদাহের।কিন্তু এই দুনিয়ায় কিন্তু সবাই সমান নয়।তাই এমনই একজন তো তার দুঃখ প্রকাশের মাঝেই আমার সামনেই অকপটে ছেলের অনুপস্থিতির অনুভবে বলেই ফেললেন -“বন্ধু মিলে হাজার জন,কিন্তু বন্ধুর মত বন্ধু কজন—?