বাহরিন থেকে IMO তে ১৩ই আগস্ট ২০১৬ বাড়িতে সবার সাথে কথা বলে। তখন সকল বন্ধু-বান্ধবদের সাথেও যোগাযোগ করতে থাকে।এছাড়াও এই সময়ে প্রতিদিন মেইল করে বিভিন্ন খবরা-খবর আদান প্রদান করতাম।বাড়িঘর আত্মীয়-স্বজন ছেড়ে মাঝ সমুদ্রে যখন নিঃসঙ্গ লাগতো তখন এই আলাপ চারিতায় পেত পরম তৃপ্তি!বোনের বিয়ের পর কর্মক্ষেত্রে আবার যোগদান করেই বাড়ি ও আত্মীয়-স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় মাঝে মাঝে সবার কথা ভেবে মন বড্ড উতলা হয়ে উঠতো।এমনই পরিস্থিতির মাঝে ৬ই সেপ্টেম্বর ২০১৬ দুবাই থেকে দিদা,মামা, মামিমা ও মাসিদের সাথে অনেকক্ষণ ধরে বাক্যালাপ করে। সবার কুশলাদি জেনে মানসিক তৃপ্তি পায়।নভেম্বরের ৩ তারিখে মিশরে সুয়েজ ক্যানেল অতিক্রম করার সময় পার্শ্ববর্তী অপূর্ব মনোরম দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করে।পরে আমাকে মেইল করে স্বচক্ষে এই দৃশ্য দেখার সৌভাগ্যের কথা জানায়।সত্যি কথা বলতে কি- ক’জনেরই বা এমন সুযোগ জোটে!১৭ই নভেম্বর তাদের শীপ AMSTERDAM গিয়ে পৌঁছায়।UNITED KINGDOM পৌঁছে তারা ল্যান্ডে পা রাখবে না,তা কি হয়?তখন পরিকল্পনা করতে লাগলো কি করে ল্যান্ডে নামা যায়।এই পরিস্থিতির মধ্যে বাদ সাধলো আবহাওয়া।চলছে মুষলধারে বৃষ্টি।তবুও আশা ছাড়লো না।যে করেই হোক ইউরোপের মাটিতে পা রাখতেই হবে।পরদিন সাহস করে নেমে পড়ল ল্যান্ডে।ট্যাক্সি নিয়ে বেরিয়ে পড়ল এদিক ওদিক।ওরা তখন একসঙ্গে পাঁচজন।প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝেও ওরা ঘুরেফিরে পেল পরম তৃপ্তি।বিভিন্ন জায়গায় তুলে নিল অনেক ছবি।জমা হল তা স্মৃতির অ্যালবামে।পরে আমাকে মেইল করে সেই সমস্ত ছবি পাঠিয়ে দেয়।ওদের এই আনন্দে আমরাও হলাম খুশি।আর ঠিক এই সময় বারবার মনে পড়ছিল-বাড়ি থাকতে বিদেশ যাবার আগে তার ব্যক্ত করা কথাটি-“থাকবো না আর বদ্ধ ঘরে,দেখবো এবার জগৎটাকে–“আজ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ঘুরে ঘুরে সেই স্বপ্ন পূরণ করছে।সেখানে দুইদিন অবস্থানের পর ১৯শে নভেম্বর নেদারল্যান্ড ছেড়ে আবার শুরু হলো যাত্রা।এই সময়ে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করার সময় সমুদ্র প্রচন্ড উত্তালের মাঝে অন্য একটি শীপ দুর্ঘটনায় পড়ার SMS তাদের শীপেও এসে যায়।তখন তাদের উদ্ধারের জন্য রেসকিউ বোট তাদের সামনে দিয়েই দ্রুতগতিতে ছুটে যায়।পরিস্থিতি দেখে ওরাও ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।২৬ শে নভেম্বর AMSTERDAM থেকে চীন অভিমুখে রওনা হলে তখনকার স্পট পোস্ট ফেসবুকেও প্রচার করে।এই সময়ে নেদারল্যান্ড থেকে সিঙ্গাপুরে আসার পথে তাদের শীপ শ্রীলঙ্কা পোর্টে সামান্য সময়ের জন্য অবস্থান করে।ওই সময়ে সেখানে শীপে তাদের সঙ্গে থাকা সিকিউরিটি ফোর্স নামিয়ে দেওয়া হয় এবং সিঙ্গাপুর এসে সেখান থেকে তাইওয়ান যাবে বলে জানায়।এই সময়ে ১৫ই ডিসেম্বর ২০১৬ ঠিক এক বছর আগে ছেলের বিয়ের বৌভাত উপলক্ষে নির্ধারিত ১৫ই ডিসেম্বর ২০১৭ এর জন্য “স্বাগতা ম্যারেজ হল” বুক করে ফেললাম।পরদিনই এই সংবাদ ছেলেকে জানিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত হই।কারণ বিলাসবহুল এই বৃহৎ বিয়ে বাড়ির সেকেন্ড ফ্লোর এবং থার্ড ফ্লোর আমাদের একসঙ্গেই প্রয়োজন ছিল।কিন্তু প্রত্যাশামতো আমাদের চাওয়া পাওয়ার মাঝে অন্যদের পেন্সিল বুকিং এর অজুহাতে আমাদের সেই আশা ব্যাহত হচ্ছিল।পরে সেই সমস্যার সমাধান হলে আমরা সাথে সাথেই বিয়ে বাড়ি বুকিং করে নিলাম। ইতিমধ্যে শীপ এসে চিনের পোর্টে পৌঁছে গেছে।৩১ শে ডিসেম্বর ছেলে চীন থেকে আমাদের সবার সাথে কথা বলে এবং HAPPY NEW YEAR – 2017 জানায়।নব বর্ষের প্রাক্কালে শুধু এই প্রার্থনাই জানাই -পৃথিবীর যে দেশেই যখন যেমন থাকুক না কেন,যেন সব সময়ে সুস্থ এবং ভালো থাকে–।১৩ই জানুয়ারী ২০১৭ থেকে ১৬ই জানুয়ারি শ্রীলংকার ভেতর দিয়ে গুজরাটের পাশ ঘেঁষে যাবার সময় ইন্ডিয়ান সিমে টাওয়ার পেয়ে যায়।সেই সময় সকল ক্রিউরা বাড়ির সাথে যোগা যোগ করে কথা বলতে থাকে।তখন জানায় তখনও সাইন আপ এর কোন খবর আসেনি।তারপর প্রায় দিন পাঁচেক আমাদের সঙ্গে তার যোগাযোগের ধরন দেখে মনে সন্দেহ দেখা দেয়।অবশেষে ২৬ শে জানুয়ারি ২০১৭ আমাদের কোনোরকম খবর না দিয়েই সোজা এয়ারপোর্ট থেকে প্রিপেইড ট্যাক্সি নিয়ে বাড়ি এসে পৌঁছে আমাদের একটু সারপ্রাইজ দিল।ঘরের ছেলে ঘরে আসায় আমরা হলাম তখন ভীষণ খুশি। বাড়ি আসার তিন দিন পর ৩০ শে জানুয়ারি ২০১৭ মিন্টু পার্কে V SHIP’S এর অফিসে গিয়ে আবার জয়েনিং এর জন্য প্রয়োজনীয় পেপার জমা করে আসে এবং ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি যাবার জন্য তৈরি আছে বলে জানিয়ে দেয়।সেই মতো ২৭ শে ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সকালে দমদম বিমানবন্দর থেকে দুবাই রওনা হয়ে যায়।মাস খানেক বাদে ১লা এপ্রিল সকাল ১১ টায় IMO করে কাতার থেকে শীপের ইঞ্জিন রুম সহ অন্যান্য অনেক দৃশ্য আমাদের দেখায়।এমন নাদেখা জিনিস দেখতে পেয়ে সবাই প্রচন্ড খুশি হলাম।আসলে এমন সুযোগ সুবিধা তো সব সময় সবার আসে না–! দিন যেতে যেতে ১৫ ই জুলাই ছেলের মেইলে জানতে পারি শীপের মাঝে দু একজন ক্রিউর বৈষম্যমূলক ব্যবহারে এক চাপা অশান্তি শুরু হয়েছে।শেষ পর্যন্ত তা সিঙ্গাপুর হেড অফিসের হাতে চলে যায়।খবরটা পেয়ে ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়ি।প্রত্যুত্তরে শুধু জানাই-বাকি কটা দিন অ্যাডজাস্ট করে মানিয়ে নিতে কিন্তু ছেলে কোনদিন অন্যায়ের সাথে আপোষ করতে শেখেনি।তাই তার প্রবল প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধে শেষ মুহূর্তে এক জটিল পর্যায়ে পৌঁছে যায়।অবশেষে কোম্পানির দৃষ্টিতে দোষী ক্রিউকে বিনা নোটিশে সাইন আপ করিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।ঠিক তখনই ছেলের প্রতি অন্যান্য ক্রিউদের আস্থা আসে বেশি এবং তার সকল কাজে সকলেই সমর্থন করতে থাকে।এমনি করে ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে কাটতে থাকে দিনগুলি।নির্ধারিত চুক্তির বাকি কটা মাস নির্ঝঞ্ঝাটে কাটিয়ে আসার জন্য সর্বদাই মিলেমিশে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে গেছি এবং সে সেই মতো চেষ্টাও করে গেছে।চাকুরীরত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে যেতে হয়েছে সেই সূত্রে আবারও একবার পাকিস্তানের করাচি বন্দরে যেতে হয় এবং সেখান থেকে ৯ই সেপ্টেম্বর দুবাই এসে পৌঁছায়।তখন থেকে সাইন আপের প্রস্তুতি চলতে থাকে।ইতিমধ্যেই আমরা ছেলের বিবাহের তারিখ স্থির করে বিয়ে বাড়ি বুকিং করে দিয়েছি।এমতাবস্থায় আমাদের প্রত্যেকের একটা চিন্তা হতে থাকে নির্দিষ্ট তারিখের আগে যদি দেশে পৌঁছাতে না পারে তখন এক প্রচন্ড অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে।তাই রিক্স না নিয়েই দেড় মাস আগেই সাইন আপের জন্য হেড অফিসে আবেদন পত্র জমা দিতে বলি।সেই মতো অবশেষে ১লা অক্টোবর ২০১৭ ডাইরেক্ট দুবাই থেকে কলকাতা এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছায়।বাড়ি এসে পৌঁছাবার পরেই পুরাদমে শুরু হয়ে যায় বিয়ের নানান সামগ্রী কেনাকাটা সহ আনুষাঙ্গিক সকল কাজকর্ম এবং ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ শুভ বিবাহ সুষ্ঠভাবে সুসম্পন্ন হয়।এক বছর আগে একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিয়ে তখন আমরা ভীষণ মনমরা হয়ে উঠেছিলাম কিন্তু ১৪ ই ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার নববধূ রূপে বৌমার গৃহে প্রবেশে যেন মা লক্ষ্মীর আগমন ঘটলো।সবাই তাকে সানন্দে বরণ করে ঘরে তুলে শুরু হলো এক নতুন অধ্যায়– বিয়ের পরই আমরা পুরী যাবার সিদ্ধান্ত নিই। সেই মতো ৩রা জানুয়ারি ২০১৮ হাওড়া থেকে ট্রেনে তারা রওনা হয়ে ৪ তারিখ ভোরে নির্ধারিত’খুশিনিবাস’ লজে পৌঁছে যায় আর আমরা মারুতি নিয়ে পরদিন সকাল ৭টায় পৌঁছে গেলাম। নব্বইঊর্ধা বৌমার ঠাকুমাকে ট্রেনে নিয়ে যাওয়া মোটেও সম্ভব নয় বলেই বিয়েই মশাইয়ের মারুতিতে আমরা যাবার সিদ্ধান্ত নিই।সেখানে চার দিন থাকাকালীন জগন্নাথ মন্দিরে পূজা দিয়ে বিভিন্ন সাইডে ঘুরতে যাই।গৌড়ীয় মঠ পরিভ্রমণে পাই পরম তৃপ্তি।আসার সময় মোহনা সহ মেরিন ড্রাইভ থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে হই মুগ্ধ।৭ই জানুয়ারি নন্দন কানন সহ অন্যান্য সি বিচের মনমুগ্ধ দৃশ্যে প্রাণ জুড়িয়ে যায়।আনন্দ সহকারে ক্রমাগত সকল সাইট দর্শন করে ৯ জানুয়ারি আমরা বাড়ি এসে পৌঁছাই। পুরী থেকে ঘরে ফিরতে না ফিরতেই পরদিন ১০ই জানুয়ারি ২০১৮ ছেলে,বৌমাকে নিয়ে হানিমুনে ছুটল উত্তরাখন্ডে।হরিদ্বার হয়ে জশীমঠ ও আউলিতে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ১০ই জানুয়ারি হাওড়া থেকে হরিদ্বার যাবার জন্য ট্রেনে রওনা হয়।কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে তুমুল তুষার পাতে ট্রেন লক্ষ্ণৌ অবধি গিয়ে থেমে যায়।তখন ওরা ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়ে।এমতাবস্থায় ট্রেনের অন্যান্য কয়েকজন যাত্রী একত্রিত হয়ে বাস ভাড়া করে হরিদ্বার যাবার সিদ্ধান্ত নেয়।সেই মতো পরদিন সকালে তারা তাদের নির্ধারিত বুকিংকরা হোটেলে গিয়ে পৌঁছায়।পরদিন রওনা হয় জশীমঠের উদ্দেশ্যে।প্রচণ্ড কনকনে ঠান্ডায় প্রবল তুষার পাতের মাঝে নানান বিপর্যয়কে অতিক্রম করে পৌঁছায় যোশী মঠের বুকিং করা হোটেলে।প্রকৃতির প্রতিকূল পরি বেশে প্রায় পর্যটক শূন্য অবস্থায় তারা পরিভ্রমণ সেরে প্রচন্ড ঠান্ডার ভয়ে ঢুকে যেত হোটেলে।রুমে বসেই জানালা দিয়ে উপভোগ করতো,না দেখা কত মনোরম দৃশ্য!এই সময়ে সেখান থেকে প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য রেল পরিষেবা ব্যাহত হয়।এমতাবস্থায় তারা মুসৌরি থাকাকালীন বাড়ি ফেরার জন্য সিদ্ধান্ত নেয় সড়ক পথে দিল্লি গুপ্তাজির বাড়ি যাবার।মুসৌরি থেকে ছেলে সৌজন্যতার খাতিরে কুশলাদি বিনিময়ের জন্য গুপ্তাজিকে ফোন করে এবং এমন বিপর্যয়ের কথা জানতে পেরেই সেখানে যাবার জন্য তিনি আমন্ত্রণ জানান।সেই মতো আমায় জানালে আমি ট্রেনের টিকিট বাতিল করে দিল্লি থেকে প্লেনে আসার টিকিট কেটে ছেলের মেইলে পাঠিয়ে দিই।ওরা যখন দিল্লি পৌঁছায় তখন গুপ্তাজির অভাবনীয় আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়।বাড়িতে অতিথির উপস্থিতিতে তাদের সাথে করে ঘুরেছে দিল্লির অনেক জায়গায়।আন্তরিকতার সেই কথা আজও অনেককে গল্পের মাঝে ব্যক্ত করে আনন্দ পায়।২২শে জানুয়ারি ২০১৮ ওরা রাত ১২টায় কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। শুভ বিবাহ সুসম্পন্ন হবার পর মাস তিনেক আনন্দে কাটিয়ে এবার চাকরিতে জয়েন করার উদ্দেশ্যে ২৪শে মার্চ সন্ধ্যায় কলকাতা বিমানবন্দর থেকে শুরু হয় যাত্রা।প্রথমে মুম্বাই।সেখানে অপেক্ষার পর নির্ধারিত সময়ে পা রাখল বাহরিণের ফ্লাইটে।২৫ শে মার্চ বাহরিন গিয়ে পৌছালে সেখানে নির্ধারিত এজেন্ট তাদেরকে নিয়ে সকাল সাড়ে ১১টায় শীপ MD HAFID এ পৌঁছে যায়।শীপে পৌঁছেই গ্যালির দায়িত্ব ভার বুঝে নিয়ে শুরু হয়ে যায় নিজ কাজকর্ম। এমনিভাবে বিভিন্ন দেশের সমুদ্রের মাঝে থেকে চলেছে নিয়মিত ডিউটি।আর যখনই সুযোগ পেয়েছে তখন হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বাড়ির সাথে কথা বলেছে।এবং মেইল করে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেই গেছে।বৌমা তখন অন্তসত্ত্বা।ঐ সময়ে ওর সুনামের খাতিরে কোম্পানি থেকে বারবার কল আসায় আবার চাকুরীতে জয়েন করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল।জয়েনিং এর পর বাড়ির জন্য সব সময় একটু চিন্তিত থাকতো।২৪ শে অক্টোবর ২০১৮ লক্ষ্মী পূজার দিনে বৌমার কোল জুড়ে আবির্ভাব ঘটল নব প্রজন্মের যেন এক মা লক্ষ্মীর! খবর পাঠানো হলো ছেলেকে। সেই সুদূর মাঝ সমুদ্রের মাঝে তখন তার মনে বইছে কতই না চিন্তা! এমনই পরিস্থিতির মাঝে প্রাপ্ত সংবাদে সে অত্যন্ত খুশি হল।তারপর প্রতিদিনই IMO র মাধ্যমে যোগাযোগ করে ছবিসহ নানান কথাবার্তা আদান প্রদান হতে থাকে।এই সময়ে বাপের বাড়িতে কিছুদিন কাটিয়ে বৌমা ২৪শে ডিসেম্বর ২০১৮ দুপুরে বাড়ি আসে।নতুন অতিথিকে কোলে নিয়ে তার ঠাম্মি ঘরে ঢুকলো।সেই সময় চলতে থাকে উলুধ্বনি সহ শঙ্খ ধ্বনি!প্রথমেই নিয়ে যায় ঠাকুর ঘরে সিংহাসনের সামনে।কোলে নিয়ে সকল দেবতাদের কাছে প্রার্থনায় জানায়- নব প্রজন্মের মঙ্গলাকাঙ্ক্ষা!তারপর কোলে নিয়ে সকল ঘরে ঘরে ঘুরে আসে।এই সময় ছোট্ট চোখে টালু মালু করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে থাকে। সে এক অনন্য অনুভূতি– ২৪ শে জানুয়ারি ২০১৯ রাত ৩ টা।ঘুমের ঘোরে গেট খোলার শব্দ পাই।কলিংবেল বাঁজতে ধড়মড় করে উঠে পড়লাম।ঘুমের ঘোরে দরজা খুলতেই দেখি গেটে দাঁড়িয়ে ছেলে।দেখেই অবাক হয়ে যাই।জিজ্ঞাসা করলে বলল-তোমাদের সারপ্রাইজ দেবার জন্যই আগমন বার্তা জানাইনি।তখন তার মুখে জানলাম ভীষণ নিরাপত্তার মাঝে সঙ্গে সশস্ত্র দেহরক্ষী দিয়ে কোম্পানি ইরাক থেকে দোহা এয়ারপোর্টে পৌঁছে দেয়। তখন প্রত্যেকটি মানুষের মনে প্রচন্ড ভয়ভীতি সঞ্চার করে চলেছে।সেখানে তখন চলছে কতই না সন্ত্রাসবাদি হামলা।চতুর্দিকে শুধু গোলাগুলি।কোথাও চলছে কত অপহরণের খেলা—!তবে সেখানে এতটা সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন চললেও তাদের চলার পথে কোন রকম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়নি।