১৯৪৭ সালের দেশভাগ
স্বপ্না নাথ
এক তুলিকার টানে অঙ্কিত সীমারেখা,
হলো দেশভাগ, চির বিপর্যয় আঁকা।
দুঃস্বপ্নসম, শরণার্থীর থাকা,
পরভূমে, প্রাণ নিয়ে শুধু বেঁচে থাকা।
কে ভেবেছে স্বাধীনতার এই খেসারত!
ত্যাগি নিজের জন্মভূমি জীবন অবপাত।
এক কোটি মানুষের ভূমির অভিঘাত,
বিশ্বখ্যাত ইতিহাসের করুণ উৎখাত!
ছায়া ময়, মায়াময়, শ্যামলেতে মোহ ময়,
প্রকৃতির নরকূল ছিল মনে নিরাময়।
কখনো জ্বলেনি আগুন ধর্মের হিংসায়,
মানচিত্রে র্যাডক্লিপ দেগে দিল সংশয়!
এক’শ এগার লাখ নির্বাসিত জন,
পিছু পানে রেখে আসে অতীতের ধন।
তিলে তিলে সঞ্চিত নিসর্গ কানন,
রেখে আসে অশ্রুময় স্বজনের শ্বশান!
শিশিরে শিশিরে ভেজা হেমন্তের ধান,
পুকুরের ভরা মিন, গোয়ালে গোধন।
স্থাবরে, অস্থাবরে, ভরা প্রাণমন,
ছেড়ে আসে ফুলে ফলে সোনালী জীবন।
এই আমার দেশ? ধর্মে ধর্মে এত বিদ্বেষ?
এতদিনের মানবতার সবই মুখোশ?
সযতনে লালিত প্রীতির আশ্বাস,
বজ্রপাতে ভেঙে গেল চিরবিশ্বাস!
কতদিন হয়ে গেল! এই পরবাস,
ভুলতে পারি কি সেই বাল্যের বাস!
এখনো বহন করি স্মৃতির নির্যাস,
আজও বুকে বাজে, আজও দীর্ঘশ্বাস!
—ooXXoo—