৮ই এপ্রিল ২০১০ জানতে পারলাম ইরান অভিমুখে শীপ রওনা হয়েছে।সে জানালো,শীপ চলন্ত অবস্থায় যে কোনও সময় মোবাইলের টাওয়ার বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। তখন পরে আবার টাওয়ারের আওতায় পৌঁছালে ফোনে যোগাযোগ করবে। ১৫ই এপ্রিল শুভ নববর্ষ -পহেলা বৈশাখ। দোকানে পূজা করতে গিয়ে বারবার তার কথা মনে পড়তে লাগলো। ওর বড় স্বপ্ন আমাদের এই দোকান “শম্পা স্টোর্স” হয়ে উঠুক অভিজাত বস্ত্র বিপনী। সেই স্বপ্ন স্বার্থক করতে সব সময় আমায় জুগিয়ে গেছে উৎসাহ।সত্যি কথা বলতে কি- আমি সব সময় ওর এই স্বপ্ন সফলের স্বপক্ষে সায় দিয়ে গেছি।চেষ্টা করেছি ওর এই আশা পূরণের কিন্তু অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সবটা সঠিকভাবে সম্ভব হয়ে ওঠে না— ২৪ শে মে ২০১০ সকাল ৯ টা ৪৩ মিনিট।ফোনে জানতে পারলাম তারা শারজায় এসে পৌঁছেছে। ওখান থেকে সম্ভবতঃ সিঙ্গাপুরে যাবে।আপাততঃ শারজায় কয়েকদিন থাকবে।এই সময়ে চীপ কুক হিসাবে তার খুব সুনাম বেড়ে যায়, সঙ্গে দায়িত্বটাও। জাহাজে কর্মরত বিদেশী ডাইভারেরা অনেক সময় খুশি হয়ে তাকে অনেক টিপস দেয়। এতদিন তার কাছে তার নিজস্ব কোন মোবাইল ছিল না তাই তখন শারজায় ল্যান্ডে নেমে একটা মোবাইল কিনে প্রথম ফোন করলো আমায়। আমি তার সর্বাঙ্গীর মঙ্গল কামনায় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে এগিয়ে যেতে বলি।২০ শে জুন ২০১০ তার বন্ধু পিন্টু তাকে ফোন করে।সে তখন শারজা পোর্টে দাঁড়িয়ে। জাস্ট এক মিনিট কথা বলতেই বাক্য বিনিময় অসম্পূর্ণ অবস্থায় কল ডিসকানেক্ট হয়ে যায়। এমতাবস্থায় পিন্টু কিন্তু তাকে তখন আর কোন ফোন না করায় ছেলে আমায় মিসড্ কল করল। আমি রিং ব্যাক করে কথা বলে আমরা যা বুঝার বুঝলাম–।সেই মতো ছেলে আমায় আমার মোবাইল নিয়ে ওদের বাড়ি চলে যেতে বলে। সাথে সাথেই আমি তিনশত টাকা রিচার্জ করে নিয়ে ওদের বাড়ি গেলাম। তখন আমি আমার মোবাইল দিয়ে ছেলেকে রিং করলাম।কানেক্ট হলে কথা বলার জন্য আমার মোবাইলটা পিন্টুকে দিলাম।সে তখন এক মিনিট নয়- প্রাণ খুলে কথা বললো।ছেলেও মুনের সঙ্গে কথা বলল কারণ তারপর দিন তার বোন মুনের বিয়ে।দুদিন পরে তার বোনেরও হবে বিয়ে।পিন্টুর বোন মুনকে সে নিজের বোন মনে করতো।তাই এই মুহূর্তে দাদার মত তার মনটাও ছটফট করছে।আর আমি তো জানি আমার ছেলেকে।সব সময় পরের জন্য বিলিয়ে দিয়ে নিজেকে ধন্য মনে করতো।আর তার মাঝেই খুঁজে পেতো এক অনাবিল আনন্দ।অথচ তার জন্য তার সব বন্ধুরা সেই ভাবে স্যাক্রিফাইস করত না।পরদিন রাতে ওদের বিয়ে বাড়ি থেকে আমি আসলে রাত দুটোয় আমাকে ফোন করে সব খবরা খবর নিল।আমি জানি আজ এই মুহূর্তে বন্ধুদের সাথে না থাকতে পেরে সে মানসিকভাবে বড্ড দুঃখ অনুভব করছে কিন্তু তার বন্ধুরা?তার অনুপস্থিতিতে সম পরিমাণ দুঃখ কি তারা পাচ্ছে?ছেলে জানে না এতদিনে তার বন্ধুদের মাঝে এসেছে প্রচন্ড স্বার্থপরতায় পরিবর্তন। আস্তে আস্তে সেগুলি আমার চোখে ধরা পড়তে থাকে কিন্তু সে মনে ব্যথা পাবে তাই সব কথা সহ্য করেও তাকে আর তা জানাইনি।তার সব কথার এক কথা- “যে যা করে করুক,তার কর্তব্য সে করেই যাবে- সৎ পথে সততার মূল্যায়ন একদিন নিশ্চয়ই হবে–” সেই লক্ষ্যে স্থীর থেকে কেটে যেতে থাকে দিনগুলি। ২রা জুলাই ২০১০ রাত বারোটা এক মিনিট।দাদা, বোনের মোবাইলে ফোন করে তার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়।দূর-দূরান্তে থাকলেও এসব কর্তব্য কাজটুকু করতে সে ভোলে না।এই ধরনের স্মরণীয় তারিখগুলি যাতে না ভুলে যায় তার জন্য তার ফোনে সেভ করা থাকতো।৪ঠা জুলাই রাত বারোটা। সেদিন ওর দিদা আমাদের বাড়িতে। তখন তাদের দুজনের মধ্যে কথা হল। পরে দেখলাম তার দিদা শাড়ির আঁচলে চোখ মুছলেন—! এত দূরে থেকেও এত অল্প বয়সে সবার কথা ভেবে চলে।বারবার মনে পড়তে লাগলো প্রথম যেদিন এয়ারপোর্টে বিদেশ যাবার প্রাক্কালে পা দুটি স্পর্শ করে বলেছিল- “দিদা! দাদু নেই, তুমি কখনও চিন্তা করোনা। যদি কোনদিন তেমন কোনো দুঃসময় এসে পড়ে,কেউ পাশে না থাকলেও সেদিন আমি থাকবো। তোমাদের কাছে আমি কিছুই চাই না-শুধু একটু আশীর্বাদ করো,যেন জীবনের সব বাঁধা জয় করে সফল হয়ে সকলের পাশে দাঁড়াতে পারি—-” তার এমন কথার জন্য মনে মনে গর্ববোধ করেন।অপেক্ষা করতে থাকেন কবে হবে তার সেই স্বপ্নপূরণ! সেদিন বুঝি কত দূরে—!! ২১শে জুলাই ২০১০। DULAM RESPONDER তখন দুবাই DRY DOCK এ দাঁড়িয়ে। জাহাজের সার্ভিসিং এর জন্য কিছুদিন ড্রাই ডকে থাকবে।এই সময়ে নতুন ওভেন এসেছে জাহাজে। ডাক পড়ল চীপ কুকের । সমস্ত ভাউচার সই করতে হবে। সেইমতো সে এগিয়ে এলো। ভাউচার হাতে নিয়ে সব পরখ করে নিতে গেলেই হঠাৎ ভদ্রলোক বললেন- ARE YOU MR. HALDER? সে তাকিয়ে পড়তেই ভদ্রলোক বললেন- I AM YOUR CARLO SIR. সে যেন তখন অবাক হয়ে গেল। বিভিন্ন সময়ে উভয়ের মাঝে অনেক কথা হয়েছে কিন্তু কেউ কাউকে কখনও দেখেনি তাই অবাক হয়ে আনন্দে সে করল হ্যান্ডসেক।তারপর সোজা নিয়ে গেল তার কেবিনে।নানা রকম খানা পিনায় আপ্যায়ন করিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় হল।আমায় ফোন করে CARLO স্যারের সাথে কথা বলিয়ে দেয়।ভারী অমায়িক লোক।আমার অনুরোধ শুনে ছেলের প্রতি তার সবরকম সহানুভূতির প্রতিশ্রুতি দিলেন।আমি খুশি হলাম।শুরু হল সেই দিনের অপেক্ষা– ২৪ শে আগস্ট ২০১০ রাখি বন্ধন।শত কাজের মাঝেও সে এদিন বোনের কথা ভোলে না। ওরা পিঠে পিঠি মাত্র দুই ভাই বোন। ভাই বোনের এই পবিত্র মিলমিশে অনেকেই ব্যক্ত করেছে গর্ববোধ! তাতে হয়েছি খুশি আমরাও।সেদিন রাত্রি বারোটা দশ।দাদা ফোন করল বোনকে। উভয়ের মাঝে হল শুভেচ্ছা বিনিময়। বোন বললো- “দাদা!তোর জন্য রাখি কিনেছি। আমরা সবাই ভালো আছি- ভালো থাকিস!” অপর প্রান্ত থেকে দাদার ফরমান এলো- বাবার কাছ থেকে ২০০ টাকা নিয়ে নিস। আমি তখন অন্য ঘরে ঘুমিয়ে পড়েছি।পরদিন সকালে চায়ের কাপে সবে চুমুক দিয়েছি।তখন আমাকে শোনালো-গত রাতে দাদার ফোনের সারাংশ টুকু। রাখি বন্ধন এর লৌকিকতা রক্ষায় বাধ্য হয়ে ১০০ টাকা হাতে ধরালাম কিন্তু হবে না।দাবী ১৬ আনা মানতে হবে। আমায় যেন ভয় দেখানো হলো-“আমি দাদাকে ফোন করে বলে দেবো তুমি তার ইচ্ছায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছ!” নিরুপায়ে আমাকে সেই দাবি মত ষোল আনাই পূরণ করতে হলো। দিলাম আরও ১০০ টাকা- তখন সে কি খুশি! পাশের বাড়ির শামু আর মিতুনকে রাখি বন্ধনের গল্প করছে।ছাদে দাঁড়িয়ে বড় গর্ব করে বলছে- দাদা আমায় ২০০ টাকা পাঠিয়েছে। দাদা বেঁচে থাকুক- দীর্ঘজীবী হোক–!ওদের এই কান্ড কারখানা দেখে আনন্দে আমার চোখের কোনে চিকচিক করে উঠলো।ইতিমধ্যে আমার একাউন্টে তার পাঠানো স্যালারি আসা শুরু হয়েছে। তাতে সাময়িক উদ্ভূত অসুবিধাগুলি দূর হতে লাগলো। এই সময়ে প্রায় মাসখানেক মোবাইলের টাওয়ার না থাকায় বাড়ির সাথে কথা বলতে পারেনি। ২৯ শে সেপ্টেম্বর ২০১০ রাত্রে কথা বললাম। জানতে পারলাম হঠাৎ উদ্ভূত সমস্যায় সে বড্ড বিচলিত।জাহাজে রান্না খাবার খেয়ে অনেক ক্রিউ অসুস্থ হয়ে পড়ে। কেউ কেউ কমপ্লেন করে।সে প্রথমে উদ্ভূত প্রব্লেমের উৎস অনুধাবন করতে না পেরে চিন্তিত হয়ে পড়ে। অবশ্য জল থেকে যে এই সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে তা অনুমান করেই কোম্পানিকে মিনারেল ওয়াটার পাঠাতে বলে এবং সেই জলে যখন রান্না হল তখন আর কোন সমস্যা সৃষ্টি হলো না। তখন শীপে তার উত্তরোত্তর সুনাম বৃদ্ধিতে ঈর্ষান্বিত দু’একজন কুচক্রী জট পাকাতে লাগে। সে তা উপলব্ধি করেই প্রতিমুহূর্তে ক্যাপ্টেনকে সবকিছু জানাতে থাকে। এহেন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানি থেকে ইনভেস্টিগেশনে এসে সব রহস্যের উৎস উদঘাটন হল।জলের রিজার্ভার সদ্য রং করা হয়েছিল।সেই রং থেকেই এই বিপত্তি।ইনভেস্টিগেশনের রিপোর্টে ক্যাপ্টেন ও কুকের দুশ্চিন্তা দূর হলো।ঈর্ষান্বিত সহকর্মীরা হল অপদস্ত।সমস্যা সৃষ্টির শুরুতেই কোম্পানিকে মিনারেল ওয়াটার পাঠাবার নির্দেশ দেওয়ায়, চীপ কুকের এই সতর্কতার জন্য সে হল প্রশংসিত।কাজ চলতে লাগলো। কমতে লাগলো এগ্রিমেন্টের সময়সীমা।অবশেষে এলো সেই দিন।সাইন আপ করে ১১ই অক্টোবর ২০১০ দুবাই এয়ার পোর্ট থেকে রাত ১১টার ফ্লাইটে রওনা হল। দিল্লি এয়ারপোর্ট এসে পৌঁছালো রাত তিনটে ৫৫ মিনিটে।পরদিন সকাল নটা কুড়ি মিনিটের ফ্লাইট ধরে আসবে কলকাতায়।এই দীর্ঘ সময় দিল্লি এয়ারপোর্টে বসেই কাটিয়ে দিল।আমায় ফোন করে সব জানাতে থাকে। আমি তখন হরিসাহা হাটে।পূজার পূর্ব মুহূর্তে ব্যবসার তাগিদে সেই দিন আমি এয়ারপোর্টে যেতে পারিনি।ওর বন্ধুদের দিয়ে মা ও বোনকে নিয়ে যাবার জন্য একটা টাটা সুমোর ব্যবস্থা করে দিয়ে যাই।দুবাই এয়ারপোর্টে ফ্লাইটে উঠবার আগে সব দিকে সতর্ক থেকে আসার জন্য বারবার নির্দেশ দিচ্ছিলাম তখন তা শুনে হাটের অন্য এক আমার হিতাকাঙ্ক্ষী ব্যবসায়ী বাসুদেব দেবনাথ আমার কাছে সব জেনে পরিষ্কার বললেন- “মশাই! আপনাকে এত সতর্ক করে দিতে হবে না। যে ছেলে দুবাই থেকে চাকরি করে ফিরছে সে ছেলে আপনার থেকেও সতর্ক–” তবুও বাবার মন- এতদিন বাড়ির টানে হয়তো ব্যস্ততায় আবেগে হঠাৎ ভুল হতে পারে ভেবেই—তারপর যখন কলকাতায় এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছালো তখন সকাল ১১:৩০।আমায় ফোন করে জানালে স্বস্তি পেলাম। বাড়ি এসেই লাগেজ রেখে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়ল বন্ধুদের সাথে। দুপুরে আর বাড়ি এলোনা। বন্ধুদের বাড়িতেই কেটে গেল সময়।স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে প্রবেশ করলেও পুরনো বন্ধুদের বন্ধুত্ব সে এখনও ভোলেনি। সেই সূত্রেই সে বাড়ি এসে সকল বন্ধুদের বাড়িতে গিয়ে দেখা করে বিনিময় করেছে শুভেচ্ছা।কালের বিবর্তনে দিন বদলেছে। কেউবা অকৃতজ্ঞের মত ভুলে গেছে ফেলে আসা দিনগুলি। তেমনই একটা দিন ১৩ই অক্টোবর ২০১০। সেই দিনটির কথা সে আজও ভুলতে পারেনি। পারবেও না কোনদিন ভুলতে।পরে সেদিনের কথা আমিও শুনে হয়েছিলাম বড় ব্যথিত। এই ঘটনার নেপথ্যে যারা যুগিয়েছিল ইন্ধন তাদের কথা মনে পড়লে আজও জেগে ওঠে এক প্রচন্ড ক্ষোভের অনুভূতি!২৩ শে অক্টোবর তার অন্তরঙ্গ বন্ধু বাপ্পা যাবে পুরী ঘুরতে। এক রকম জোর করেই নিয়ে যায় বন্ধুকে। তিনদিন সেখানে থেকে বাড়ি ফিরলো।সেই স্মৃতিগুলি আজও ফটো অ্যালবামে শোভা পাচ্ছে। দীর্ঘদিন জাহাজে উন্নত পরিষেবার মধ্যে কাটিয়ে বাড়ি এসে বাড়ির সবকিছুই যেন পুরানো লাগতে লাগলো। ঘরের সমস্ত ফার্নিচারের পরিবর্তন ঘটাতে চেয়ে আমার সঙ্গে পরামর্শ করল। দীর্ঘদিন বাড়ীর রং করা হয় না তাই প্রথমেই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো বাড়ি রং করার। মাস খানেকের মধ্যেই কোম্পানি থেকে আবার কল আসলে চলে যেতে হবে তাই তড়িঘড়ি রংয়ের কাজ শুরু করা হলো। ১৫ই নভেম্বর শুরু করে শেষ হলো ৬ ডিসেম্বর।কালার কম্বিনেশন বাড়ির সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলে,অনেকেই প্রশংসা করে।তাতেই ছেলের বড্ড আনন্দ।আমাদের পিতা পুত্র সম্পর্কটা ছিল অত্যন্ত ফ্রাঙ্কলি।যখন যেখানে যা হতো আমাকে ও মাকে মন খুলে সব কথা বলতো।২০ শে ডিসেম্বর ২০১০ রাতে আমাকে ও তার মাকে ডেকে তার মনের একান্ত কিছু কথা ব্যক্ত করলো। তখন একমাত্র বোনের বিবাহে আমার কি ভাবে কি করার ইচ্ছা সেই সম্পর্কে আলোচনা করলো।সে স্পষ্ট ব্যক্ত করল একমাত্র বোনের বিবাহ এমনভাবেই সুসম্পন্ন করতে হবে যাতে স্মরণীয় হয়ে থাকে। তাতে যদি আরও দু’এক বছর এই চাকরিতে সমুদ্রে ভেসে বেড়াতে হয় তবুও তাই করবে।আমরা বললাম তারও বয়স হচ্ছে। বোনের বিয়ের পরই তার বিয়ের কথাও আমরা ভাবছি, বলায় এক বাক্যে তা অস্বীকার করল। পরিষ্কার বললো চাকরিরত অবস্থায় ফেসবুকে বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবীর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে অনেক প্রস্তাব আসছে কিন্তু এই বিষয়ে সে মোটেও আগ্রহী নয়।তার একমাত্র চিন্তা,আগে কি করে বোনের বিবাহ সর্বাঙ্গিন সুন্দরভাবে দেওয়া যায়।আমাদের ইচ্ছানু যায়ী বোনের বিবাহের পর পরই তার বিবাহের সম্পর্কে কোন কথাই শুনতে চাইলো না।বোনের বিবাহের পর একটি বছরের ভিতর তার বিবাহের জন্য আর্থিক সংকুলনের কথা বললেই পরিষ্কার বলল যখনকার যেমন অবস্থা তখনকার পরিপ্রেক্ষিতে তেমন ব্যবস্থা হবে।তা নিয়ে এখন ভাবতে হবে না । ঠিক এই সময়ে কোম্পানি থেকে পরপর চাকুরীর কল আসায় ১৬ই মে ২০১১ সকালের ফ্লাইটে মুম্বাই রওনা হয়ে গেল।মুম্বাই পৌঁছে DULAM INTERNATIONAL কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে ভিসা ও টিকিট সংগ্রহ করল।৩১শে মে পৌঁছালো কাতার।এয়ারপোর্ট থেকে কোম্পানির এজেন্ট তাকে রিসিভ করে পৌঁছে দিল হোটেলে।সেখানে একদিন রেখে কোম্পানি একটা ট্রেনিং করিয়ে পরদিন পৌঁছে দিল DULAM INTERNATIONAL কোম্পানির নির্দিষ্ট DULAM PROVIDENCE শীপে।রাত্রে ফোনে বিস্তারিত জেনে আমরা হলাম চিন্তামুক্ত–