১৩ই এপ্রিল রাত্রে ফোন করে জানতে পারলাম তাদের শীপ আবার রওনা হয়েছে।দুই মিনিট কথা বলতেই টাওয়ারের বাইরে চলে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।১৫ই এপ্রিল শুভ নববর্ষ। সুপার মার্কেটে আমাদের দোকান “শম্পা স্টোর্স” এ পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে পূজা করছি। বারবার মনে পড়তে লাগলো তার কথা।পিতৃত্বের যন্ত্রণা কত যে মারাত্মক, তা আমি দোকানে বসে তিলে তিলে অনুভব করতে লাগলাম।আর সেই সময়ে সে সমুদ্রের মাঝে ভেসে চলেছে।ছেলে হয়তো জানেই না-আজ পহেলা বৈশাখ! তবে বিধাতার কাছে প্রাণ খুলে জানালাম প্রার্থনা। এই নববর্ষে তার জীবনে আসুক অভাবনীয় সাফল্য! ৪টা এপ্রিল ২০০৬।বাবা হয়ে ছেলের কাছে এই প্রথম চিঠি লিখলাম। মুম্বাই আন্ধেরি ওয়েস্টে RKHS এর অফিসের ঠিকানায় পোস্ট করলাম। এই চিঠি কবে পাবে, আদৌ পাবে কিনা- সে বিষয়ে কোন ধারনা ছিল না।পরদিনই ওদের শীপ থেকে ছেলের লেখা চিঠি পেলাম।এই চিঠি সে ১৭ই মার্চ লিখেছে। এটাও বাবার কাছে তার লেখা প্রথম চিঠি।পরবর্তীতে যত চিঠি সে আমাদের লিখেছে তা সবই স্মৃতি স্বরূপ আমার কাছে গচ্ছিত আছে। মাঝে মাঝে সেই গুলি বের করে স্মৃতিচারণ করি। এই সময়ে প্রথম প্রথম বন্ধু-বান্ধব ও স্যারেদের এমনকি পাড়া-প্রতিবেশী কিছু কিছু হিতাকাঙ্খীদের কাছেও সে চিঠি লিখেছে।তার নির্দেশ মত সেই সমস্ত চিঠি সময় মত সবার কাছে পৌঁছে দিয়েছি।সকলেই হয়েছে খুশি।কেউবা করেছে প্রাণ খুলে আশীর্বাদ। তার বন্ধু পিন্টুকে লেখা প্রথম চিঠি নিয়ে যখন ওদের বাড়ি যাই, সে কি আগ্রহ! পিন্টু আর বাপ্পা ছিল ওর খুব কাছের। পরে পিন্টুর মা ও বোনের কাছ থেকে জানতে পারি- বন্ধুর চিঠি পেয়ে সে ঘরের দরজা বন্ধ করে পড়তে গিয়ে দরজা আর খোলে না। অনেক সময় গড়িয়ে যাবার পর বাড়ির সকলের ডাকাডাকির পরও যখন দরজা না খোলে তখন সকলেই বিচলিত হয়ে পড়ে।পরে যখন দরজা খোলে তখন দ্যাখে চিঠি হাতে নিয়ে হাউমাউ করে কাঁদছে।সকলে ব্যস্ত হয়ে পড়ে-চিঠিতে বন্ধু কি লিখেছে তা দেখার জন্য। পরে ওই চিঠি পড়ে সকলে প্রশংসা করে। বাড়ি ছেড়ে মুম্বাই শহরে এসে সামান্য একটা চাকরির জন্য যে কতটা কষ্ট করতে হচ্ছে তার জন্য বন্ধু হিসাবে তাকে যে কথাগুলি লিখেছে তা পিন্টুর বাবার কাছে খুব ভালো লেগেছে। তাই তার মুখেও ছেলের বারবার প্রশংসা শুনতে পেয়ে বাবা হয়ে তখন খুব ভালো লাগছিল।এই সময়ে ওর বন্ধু বান্ধবরা আমার কাছ থেকে ওদের কোম্পানির ঠিকানা সংগ্রহ ক’রে তারাও চিঠি আদান প্রদান করে। তখন ওদের বন্ধুত্ব ছিল মনে রাখার মত।সমুদ্রের মাঝে কর্মরত রয়েছে তাই বন্ধুর মঙ্গল কামনায় সব সময় ঝড় বৃষ্টিতে উত্তাল সমুদ্রে সাদা সতর্কতায় থাকার জন্য বারবার বলতে থাকে। প্রত্যুত্তরে ছেলে লিখেছিল- কিছু হবে না, হলে সাঁতরে তীরে উঠে আসবে। পরে অনেকেই এই কথা জেনে তার সেদিনের মনের জোর ও সচেষ্টতার প্রতিবেদন শুনে প্রশংসা করে। আর চিন্তা গ্রস্ত পিতা-মাতা হিসাবে আমরা সর্বদাই বিধাতার কাছে প্রার্থনা জানিয়ে গেছি- ওর স্বপ্ন যেন স্বার্থক হয়! দিনের পর দিন প্রহর গুনেছি।ভগবানের কাছে বারবার জানতে চেয়েছি- আসবে কি সেই দিন—– কিন্তু উত্তর পাইনি।তবুও অপেক্ষায় রয়েছি আজও——। ২০০৬ সালের মে মাসের শেষ সপ্তাহ।একদিন রাত্রি আটটা নাগাদ ছেলে ফোন করে জানালো, বাবা আমি সুদীপ বলছি! অনেকদিন পর তার কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়ে অশান্ত মন হলো অনেকটা শান্ত। তখন ফোনে জানলাম পরদিন তারা ল্যান্ডে আসছে। ২৯ শে মে দুপুর আড়াইটার মধ্যে বোট চলে এলো ক্রিউদের নিতে। সবাই সবার লাগেজ নিয়ে উঠে পড়লে বোট চলতে শুরু করলো। শীপের বাকি ক্রিউরা তাদের হাত নেড়ে টাটা করছে। মন চাইছিল না ছেড়ে আসতে। চোখ দুটো আস্তে আস্তে ভিজে উঠলো। যতদূর দেখা যায় তাকিয়ে রইল উভয়েরা উভয়ের দিকে। অবশেষে চলে আসলো পোর্টে।সবাই এগিয়ে গেল CST স্টেশন এর দিকে। সেখান থেকে যে যার সুবিধামত গন্তব্যের দিকে রওনা হলো। ছেলে আসলো ট্রেন ধরে সোজা সান্তাক্রুজ নিজের রুমে।সবাই খুশি। তারা তখন জানতে চাইলো শীপের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা। সে তখন ক্লান্ত। তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ল। পরদিন পৌঁছালো আন্ধেরি RKHS অফিসে। স্যারকে মুখ বন্ধ খামখানি দিল। তা খুলে দেখে তিনি বলে উঠলেন- “গুড! ভেরি গুড- ওয়েল ডান!!” ক্যাম্পবস ভালো রেকমেন্ড করেছেন।স্যার তাকে একটু বসতে বললেন। কিছুক্ষণ পর অফিস থেকে বেরিয়ে বললেন- আজই আপনাকে আবার আর্জেন্ট জয়েনিং করাব।আপনি করবেন কি?সে সব কিছু শুনে তখনই রাজি হয়ে গেল। ৩০ শে মে ২০০৬ বিকালের মধ্যেই পৌঁছে গেল SCANLAY-1 নামের শীপে।ক্যাম্পবস ছিলেন মিঃ বিভূতি হালদার। কলকাতার লোক।খুব অমায়িক তিনি। ছেলেকে বললেন আপনি খুব টায়ার্ড তাই আজ রেস্ট নিন। কাল থেকে ডে ডিউটি আপনার।সে সোজা চলে গেল তার কেবিনে। ফ্রেশ হয়ে হালকা ডিনার সেরে সোজা ঘুম। কারণ তখন তার শরীরে সইছে না। পরদিন সকাল হতেই শুরু হল নির্ধারিত ডিউটি। শিপে ১৭ জন ক্যাটারিং স্টাফ সহ মোট ১৮৭ জন ক্রিউ। এখানে সবাই ভালো। কোন চিৎকার নেই। নেই কোন ঝামেলা। দিব্যি চলতে লাগলো কাজ। এখন কাজের দক্ষতা বেড়েছে তাই কোন রকম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়নি। আসলে এই শিপে তখন টেম্পোরারি ভাবে আর্জেন্ট রিক্রুট করা হয়েছিল। অ্যাসিস্ট্যান্ট কুকের ইমার্জেন্সি কলে বাড়ি যাওয়াতে সেই পোস্ট হঠাৎ শূন্য হয়ে পড়ে তাই তাকে টেম্পোরারি কয়েক দিনের জন্য রিক্রুট করা হয়। কাজ চলল ভালই।কটা দিন পরে বাড়ি থেকে ফিরে এলে ছেলে সাইন আপ করে চলে আসে।এই সময়ে প্রভাত বাবুর জামাই দীনবন্ধু মাতুঙ্গা থেকে বাড়ি ফেরার টিকিটের ব্যবস্থা করে দেন।ছেলে আজও সেই কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে। ১৫ ই জুন ২০০৬ ভোর ৩ টা ১০।ওদের ট্রেন হাওড়ায় এসে পৌঁছালো। তার আগেই ছেলের বন্ধুদের নিয়ে মারুতি ভ্যান ভাড়া করে পৌঁছে গিয়েছিলাম হাওড়ায়। ১৯ নম্বর প্লাটফর্মে ট্রেন ঢুকছে। আমরা সবাই আগে পিছে করে প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে গেলাম। যাত্রীরা নেমে যে যার মত চলে যাচ্ছে কিন্তু ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে ছোটাছুটি করতে লাগলাম। যেখানে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম তার সামনেই ছিল কোচ নাম্বার সিক্স। আমি ভিতরে ঢুকে খুঁজতে লাগলাম। আমার কণ্ঠস্বরে সাড়া দিল- বাবা! আমি এখানে। আগের দিন রাত্রে আমায় ফোন করে জানায়- তৎকালে টিকিট কাটাতে সিট খালি থাকায় এসি কম্পার্টমেন্টে সিট ট্রান্সফার হয়েছে। ঘুমিয়ে পড়েছিল তাই নামতে দেরি হয়ে যায়। আমায় পেয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করল। জিজ্ঞাসা করল- বাবা! ভালো আছো? আমি সঙ্গে সঙ্গেই পিন্টুকে ফোন করে ৬ নং কোচের সামনে আসতে বললাম। বন্ধুকে দেখার জন্য তাদেরও আর তর সইছে না। ওরা ছুটে এল। অবশেষে ৬ মাস পর বন্ধুদের তৃপ্তির আলিঙ্গন! বাড়িতে ওর মাকে ফোন করে পৌঁছানো সংবাদ জানিয়ে দিল।এদিকে বাড়িতে মা,বোন অপেক্ষা করছে-কখন এসে বাড়ি পৌঁছাবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা বাড়ি পৌঁছে গেলাম। ওর মা ও বোন তখন বারান্দায় অপেক্ষায়। সে ঘরে ঢুকেই বাস্তু দেবতাকে ভক্তি ভরে করল প্রণাম। হয়তো জানালো – হে ঠাকুর ! সেদিন তোমাকে ছেড়ে চাকরির সন্ধানে বেরিয়েছিলাম। আজ ফিরে এলাম তোমার বাস্তুতে—। সকালে কোন রকমে ব্রেকফাস্টটা সেরে বন্ধুরা জোর করে ওকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। শরীরের ধকল থাকলেও বন্ধুদের সাহচর্যে ফিরে পেয়েছে সকলেই উৎসাহ। সবার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করে কাটিয়ে দিল সারাটা দুপুর। মা ভাত বেড়ে বসে রইলো। তখন তার পেটে ছিল না খিদে। খিদে ছিল মনে। বন্ধুত্বের বন্ধনে ঘুরে বেড়িয়েছে একবাড়ি থেকে অন্য বাড়ি। দীর্ঘদিন পর বন্ধুকে কাছে পেয়ে তারা একত্রে বিনিময় করেছে জমে থাকা না জানানো কথা। বন্ধুদের মাঝে জমে উঠল এক অনাবিল আনন্দের জোয়ার! বাড়ি পৌঁছানোর দুদিন পর তার অব্যক্ত কিছু কিছু ভয়ংকর যন্ত্রণার কথা বন্ধুদের মারফত জানতে পারি।আমি তার মুখে শুনতে চাইলেও আমাকে কিছুতেই জানায়নি। আমরা কষ্ট পাবো তাই নিজে অনেক কষ্ট সহ্য করেও আমাদের কাছে সব সময় অনেকটা লুকিয়ে গেছে।বাড়ি আসবার পর জানতে পারলাম OCCEAIN MAINTANER-1 শীপে পৌঁছে প্রথমেই গেল ক্যাম্পবস মিঃ কোনির কাছে। তিনি গোয়ার বাসিন্দা ছিলেন। ছেলের কাছে সব জেনেশুনে তার জন্য নির্দিষ্ট রুমে যেতে বললেন। এক এক করে সকলের সাথে পরিচয় হলো।সবাই হ্যান্ডশেক করলো। নানান প্রশ্ন বিনিময় হল। চলতে লাগলো কাজ কর্ম। এগোতে থাকে দিন। প্রথম প্রথম দু’একদিন একটু অসুবিধা হচ্ছিল কারণ তখন সে ঐ শীপে একদম নতুন। কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি সে সব কাজ শিখে নিতে পারে। এমনিতেই কোন কাজ একবার বললে কিংবা দেখলে সহজে সেটা আয়ত্ত করে নিতে পারতো। তাই সব কাজ খুব তাড়াতাড়ি শিখে নিচ্ছিল। ভয় পেয়ে কোন কাজে পিছিয়ে যেত না। সব কাজ চ্যালেঞ্জ নিয়ে করতো। মাঝে মাঝে প্রচন্ড কষ্ট হতো কিন্তু ভয় পেত না। তখন ওর মাথায় মাত্র একটা চিন্তা- তাকে বড় হতেই হবে! ছেলের তখন নাইট ডিউটি। একজন চিপ কুকের অধীনে দুইজন অ্যাসিস্ট্যান্ট কুক। একজন ছেলে নিজে আর অন্য একজন। সে ছিল গোয়ার বাসিন্দা। ক্যাম্পবসের এক জায়গার লোক। প্রথম কটা দিন যেতেই শুরু হল মৃদু র্যাগিং।ছেলে সেটা বুঝতে পারল। সর্বদা সতর্ক থেকেও মাঝেমধ্যে হার মানতে হয়েছে অন্য লোকের কাছে কিন্তু সহসায় হেরে যাবার পাত্র সে নয়।রান্নার সময় যাতে তা খারাপ করে দিয়ে তার বদনাম করাতে পারে তার জন্য করেছে তারা নানা রকম কুপরিকল্পনা মাফিক ভিন্ন সময়ে নানান কার সাজি ।কিন্তু ছেলের সতর্কতায় তার সাথে এঁটে উঠতে পারেনি।ফলে কুচক্রী সহকর্মীরা বিভিন্ন সময় হয়েছে অপদস্ত।ক্যাম্পবসের ক্ষোভ গেছে বেড়ে।বিভিন্নভাবে তাকে নাজেহাল করার উদ্দেশ্যে অকারণে খাটিয়ে নিত। দিনে দিনে কাজের চাপ বাড়িয়ে দিতে থাকে। শরীরে আর সইছে না তবুও বিভিন্ন সময়ে শীপের বড় ফ্রিজ রুমের ভেতরে ঢুকিয়ে সবজি, ফল, মাছ, মাংস পরিষ্কার করার ফরমায়েশ করত। প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যে বড় কষ্ট হতো। দিন দুয়েক যেতেই সে যখন বুঝতে পারলো এটা ইচ্ছাকৃতভাবে জব্দ করার কৌশল নিয়েছে তখন সেও ওই ফ্রিজ রুমের সকল জিনিস পরিষ্কার করার সুকৌশল প্রয়োগ করে,তাদেরকেই উল্টে অবাক করিয়ে দেয়। অন্যান্য যেসব কাজ করতে দিত, সময় বুঝে একটু কষ্ট হলেও তা খুব তাড়াতাড়ি কমপ্লিট করে ফেলতো।তার দক্ষতা দেখে ওরা হয়ে যেত অবাক। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে হেয় করার চেষ্টা করত কিন্তু তার সজাগ দৃষ্টি এড়িয়ে তারা সফল হতে পারেনি।তাদের কুপরিকল্পনার প্রমাণ হাতে নাতে ধরিয়ে দিয়ে ক্যাপ্টেনের কাছে তারা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে অপমানিত।তাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন- ভাবে জব্দ করার চেষ্টা করেছে। এত লোকের রাইস হতো বিশাল বড় হান্ডিতে। যখন রাইস রেডি হবার সময় হতো তখন গ্যালি থেকে ওরা সবাই সরে যেত। দেখতো সে কি করে।হান্ডি নামাতে দেরি হলে রাইস গলে যাবে আর তখনই এসে করবে নানারকম গালা- গালি। রাইস নষ্ট হলেই করবে তার নামে কমপ্লেইন। এত বড় হান্ডি একা কি করে পাল্টি করবে? ওদিকে নষ্ট হবার মুহূর্ত পেরিয়ে যেতেই ওরা ফিরে এলে ছেলে কিন্তু তাদের পাত্তা দিল না। তার মত তার কাজ করে চললো। ঠিক এরকম একদিন চিকেন রোস্ট হচ্ছে। ওভেনের মধ্যে যখন ট্রেসহ বের করার সময় হলো তখন তাকে এটা জ্বলন্ত ওভেন থেকে বের করতে বলে। সে সাঁড়াশি আনতে গেলে হাত বাড়াতেই তা নিয়ে চলে গেল।বলে গেল রোস্ট যেন না পুড়ে যায়। এদিকে রোস্ট তখন গরম ট্রেতে পুড়ে যেতে চলেছে। উপায়ন্তর না দেখে খালি হাতেই ওই গরম ট্রে বের করে আনলো। হাত লাগাতেই হাতের চামড়া গেল পুড়ে। কিছুটা হাতের চামড়া পুড়ে লেগে গেল গরম ট্রেতে। সঙ্গে সঙ্গেই নিচে ট্রে নামিয়ে চলে গেল উপরে হসপিটালে।ডাক্তার দেখেই চমকে উঠে বললেন- এ বাবা! এমনটা কেমন করে হলো?সে সমস্ত ঘটনাটা বলল। সঙ্গে সঙ্গে মলম ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে ওয়াশ করিয়ে নিয়ে গেলেন ক্যাপ্টেনের কাছে। তিনি হাত ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় দেখে সমস্ত ঘটনাটা শুনতেই প্রচন্ড রেগে গেলেন চীপ কুকের উপর। সঙ্গে সঙ্গেই ক্যাপ্টেন ডেকে পাঠালেন ক্যাম্পবসকে। তিনি আসতেই রেগে বললেন- চিপ কুক এত সাহস কোথায় পেল,শীপে র্যাগিং করার? সঙ্গে সঙ্গেই তাকে ডাকা হল। ক্যাপ্টেন ছেলের হাতের অবস্থা দেখিয়ে প্রচন্ড বকাবকি করলেন। সঙ্গে সঙ্গেই সবার সামনে RKHS অফিসে ফোন করে তাকে সাইন আপ করার ব্যবস্থা করলেন এবং নির্দেশ দিলেন সে যেন আর গ্যালিতে (কিচেন) না ঢোকে। পরে কোম্পানি থেকে বোট আসলেই তাকে সাইন আপ করিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন।