হরিসাহা হাট ক্ষুদ্র ওস্তাগার ও পাইকারি ব্যবসায়ি উন্নয়ন সমিতির অফিস ঘরে তখন চলছে বিশেষ জরুরি সভা। টুরের ভাবনায় ভাইজাগের কথা উঠে আসতেই সমিতির সকল সদস্যদের সর্বসম্মতিতে এই প্রস্তাব পাশ হয়ে গেল। ধীরে ধীরে শুরু হয়ে যায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি।নোটিশ দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ট্যুরে যেতে আগ্রহী সদস্যদের তালিকা অনুযায়ী ট্রেনের রিজার্ভেশন চার মাস আগে কমপ্লিট করা হলো। তারপরেও অনেক সদস্যদের পক্ষ থেকে অনুরোধ এলেও তা আর কোনোভাবেই পূরণ করা সম্ভব হলো না। ধীরে ধীরে ট্যুরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া চলতে থাকলো। যোগাযোগ করা হলো “ফাইভ স্টার ট্যুর এন্ড ট্রাভেল” এর সঙ্গে। কয়েক দফা আলোচনার পর ট্যুরের এক মাস আগেই ভাইজাগে ৯০ রুম বিশিষ্ট পাঁচ তলা DWARAKA INN হোটেলেই সমিতির ৩৩টি পরিবারের মোট ৯৪ জন সদস্যের জন্য ৩৭টি রুম বুকিং করা হলো। ঠিক এই সময়ে সামাজিক দায়বদ্ধতায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সমিতির উদ্যোগে এক বিরাট স্বেচ্ছায় রক্তদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় যার জন্য ট্যুর পরিচালনায় আমরা যারা যুক্ত রয়েছি তারা কিছুদিনের জন্য এদিকে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। অবশেষে ৬ই মার্চ ২০২৩ হাওড়া নিউ কমপ্লেক্সের ২২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে “কন্যাকুমারী এক্সপ্রেস” এ শুরু হল আমাদের যাত্রা। বিকাল ৪:১৫ মিনিটে ট্রেন ছাড়লো। দুরন্ত গতিতে ট্রেন ছুটে চলল গন্তব্যের দিকে। পরদিন ৭ই মার্চ ভোর ৫ঃ৩০ মিনিটে আমরা বিশাখাপত্তনম স্টেশনে গিয়ে পৌঁছালাম। সেখান থেকে দশখানা টাটা সুমো ভাড়া করে আমরা নির্ধারিত হোটেলে গিয়ে পৌঁছালাম। তারপর সকল সদস্যদের মাঝে রুমের চাবি প্রদান করা হলে যে যার মত রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে সবাই ধীরে ধীরে আসতে লাগলো সকালের টিফিনের জন্য বিশাল ড্রয়িং রুমে। ততক্ষণে সকলের জন্য টিফিনও তৈরি হয়ে গেছে। একত্রে সবাই ধীরে ধীরে টিফিন সেরে যে যার সুবিধা ও পছন্দমত ধারে কাছের সাইড সিন দেখতে গেল। আমরা কয়েকজন মিলে গেলাম রামকৃষ্ণ বিচে। সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হলাম। সমুদ্রের মাঝে পাহাড়ের ভগ্ন পাথর স্তম্ভে উঠে অনেকেই ছবি তুললো। আমিও বাদ গেলাম না। বড় বড় ঢেউ এসে পাথরে আছড়ে পড়তেই সে কি এক অপরূপ দৃশ্যে মন ভরে যেতে লাগলো। সেখান থেকে গেলাম দক্ষিণেশ্বরে ভবতারিনির আদলে প্রতিষ্ঠিত কালি মন্দিরে। সেখানে কিছু সময় কাটিয়ে গেলাম চার্চে। সেখানকার দর্শনীয় দৃশ্য দেখে দুপুরের মধ্যে চলে এলাম হোটেলে। দুপুরের আহারাদি সারার পর যে যার মতো রুমে গিয়ে সাময়িক বিশ্রাম নিয়ে বিকাল চারটায় দশখানা টাটা সুমো নিয়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম নির্ধারিত সাইট সিন দেখবার জন্য। প্রথমেই আমরা গেলাম রামা নাইডু স্টুডিওতে। টিকিট কেটে আমরা সেখানে প্রবেশ করে এপাশ-ওপাশ ঘুরে ফিরে দেখতে লাগলাম। কিন্তু দেখা আর সহজে শেষ হয় না।তবুও ব্যস্ততায় সব দেখা শেষ না করেই আমাদের স্টুডিও থেকে বেরিয়ে আসতে হলো। এবারের গন্তব্য “ভিমলি বিচ”। আমাদের গাড়ি সারিবদ্ধভাবে আবার ছুটতে শুরু করলো। পাহাড়ের গা বেয়ে সারিবদ্ধ ভাবে আমাদের গাড়িগুলো ছুটে চলেছে।দেখতেও খুব ভালো লাগছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা “ভিমলি বিচে” পৌঁছে গেলাম। গাড়ি থেকে নেমে আমরা বিচে ঘুরতে লাগলাম। তখন সবাই যার যার অবস্থান মত ছবি তোলায় ব্যস্ত। মিনিট চল্লিশ সেখানে কাটিয়ে এবার গাড়ি ছুটল “ঋষিকোন্ডা” বিচে। আমাদের যেতে যেতে প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। গাড়ি থেকে নেমেই তড়িঘড়ি সামুদ্রিক দৃশ্য দেখে নিলাম। সন্ধ্যা নামতেই দেখলাম পূর্ণিমার চাঁদের বিচ্ছুরিত আলো সমুদ্রের জলে পড়ে হচ্ছে প্রতিফলিত।মিষ্টি আলোর প্রতিফলনে যেন সোনাঝরা আলোয় আলোকিত হয়ে উঠলো ।সে এক অপূর্ব মনোরম দৃশ্য! দিনের আলো নিভে যেতেই আমরা রওনা হলাম হোটেলের দিকে। রাত নটায় আমরা হোটেলে এসে পৌঁছালাম। ৮ই মার্চ ২০২৩ বুধবার আমরা সবাই ভোর সাড়ে পাঁচটায় হোটেল থেকে এলাম বিশাখাপত্তনম স্টেশনে। সেখান থেকে “কিরন্ডল প্যাসেঞ্জারে” আমরা রওনা হলাম আরাকুর উদ্দেশ্যে। পাহাড়ের বুক চিরে আঁকা বাঁকা পথ ধরে অসংখ্য গুহা পেরিয়ে এগিয়ে যেতে লাগলাম। পাহাড় কেটে তৈরি গুহার ভিতর দিয়ে যেতে যেতে উপভোগ করলাম দুই পার্শ্বে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। দেখলাম উঁচু পাহাড়ের গা জড়িয়ে লোহার নেট আটকে দেওয়া রয়েছে। সম্মুখে যতই যাই পাহাড় আর শেষ হয় না। আমাদের নির্ধারিত স্টেশন বড় গুহালুতে সকাল ১১ টায় গিয়ে পৌঁছালাম। স্টেশন থেকে আস্তে আস্তে আমরা সবাই নিচে নেমে এলাম।তখন পাহাড়ের নিচে অপেক্ষারত দুইখানা ৫০ সিটের বাস আমাদের জন্য প্রস্তুত। আমরা ধীরে ধীরে উঠে পড়লাম। একটু এগোতেই পৌঁছে গেলাম বড়গুহালুর প্রবেশ দ্বারে। টিকিট কেটে আমরা সবাই গুহায় প্রবেশ করে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে লাগলাম। যতই নামছি ততই হচ্ছি মুগ্ধ! ভাবছি প্রকৃতির এ কি অপরূপ সৃষ্টি! হাজার হাজার দর্শনার্থী পিঁপড়ের সারির মতো এগিয়ে চলেছে। সেখানে বিভিন্ন রঙের লাইটের প্রতিফলনে তৈরি হচ্ছে এক মধুর মায়াবী দৃশ্য। সবাই তা ক্যামেরা বন্দি করলাম। ধীরে ধীরে ভিড় কাটিয়ে আমরা গিয়ে পৌঁছালাম দর্শনের আকাঙ্ক্ষায় পাহাড়ের শীর্ষে শিব লিঙ্গের ছোট্ট গুহায়।সর্বোচ্চ শিখরে খাঁড়া সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে যেন পা কাঁপতে লাগলো। মনের মধ্যে তখন একটা ভীতির স্পন্দন চলছে। কোন দিকে না তাকিয়ে ঠাকুরের নাম স্মরণ করে এগিয়ে গেলাম। ঠাকুর স্পর্শ করে ভক্তি ভরে সশ্রদ্ধ প্রণাম করে আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে খুব সন্তর্পনে আস্তে আস্তে নিচে নেমে এলাম। উপরে উঠতে উঠতে দেখেছি আবার নামতে নামতেও চারি পার্শ্বের আকর্ষণীয় দৃশ্যগুলি দেখতে লাগলাম। দেখা আর শেষ হয়না। এত সংখ্যক সদস্যকে নিয়ে চলতে গিয়ে আমাদের সময়ও লাগলো অনেকটা বেশি। বাসস্টপেজে কেউ আসে তো- কেউ আসে না। তাদের অপেক্ষায় বেশ কিছুক্ষণ সময় বেশি কেটে গেল। ততক্ষণে আমাদের মাঝে পরিচালনার দায়িত্বে থাকা বিজন সাহা মহাশয় অনবরত বাঁশি বাজিয়ে সবাইকে সতর্ক করে চলেছেন। অবশেষে দুপুর তিনটায় আমরা বাস নিয়ে পদ্মপুরম গার্ডেনে রওনা হলাম। সেখানে গিয়ে আমরা আমাদের দুপুরের আহারাদি সেরে নিলাম। সুসজ্জিত গার্ডেনের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে ঘুরে সবাই দেখলাম। সেখান থেকে আমরা বেরিয়ে গেলাম “ট্রাইবল মিউজিয়াম”। সত্যিই সে এক অপরূপ দৃশ্য! আদি কালের আদিবাসীদের জীবন যাত্রার দৃশ্যপটের অপূর্ব ভাস্কর্য দেখে মুগ্ধ হলাম। ছবি তুললাম- সঙ্গে ভিডিও। যেন প্রাণ ভরে গেল। সব দৃশ্য দেখতে দেখতে আমরা কেউ কেউ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লাম। পরে প্রবেশদ্বারে একত্রিত হয়ে এবার রওনা হলাম অনন্ত গিরি কফি প্লান্টেশনে। পাহাড়ের গা বেয়ে উপরে উঠে দেখতে লাগলাম সব দৃশ্য। তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে তাই আর উপরে না উঠে নিচে নেমে এলাম। সেখানে আমরা সবাই মিলে কফি খেলাম। ছবি তুললাম। করলাম কেউ কেউ ভিডিও রেকর্ডিং। সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে সকল স্পটে আমরা পৌঁছাতে পারলাম না। অন্ধকার নেমে আসায় চলন্তপথে আবছা দৃষ্টিতে দেখলাম গালিকুন্ডা ভিউ পয়েন্ট ও কর্তিকি ওয়াটার ফলস। তখন রীতিমতো অন্ধকার হয়ে গেছে। আমরা তখন সেই অন্ধকারের বুক চিরে আঁকাবাঁকা পাহাড়ের গা বেয়ে নিচে নেমে আসতে লাগলাম। নিচে নামতে গিয়ে আমাদের মাঝে অনেকেই অসুস্থ হয়ে বমি করতে লাগলো। আমরা তাদের তাৎক্ষণিক পরিষেবা দিয়ে সুস্থ করলাম। চলতে চলতে আমরা রাত দশটায় হোটেলে এসে পৌঁছালাম। সাথে সাথে সবাই একটু ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবারের জন্য এসে হাজির হলাম ডাইনিং রুমে। পরদিন সকালে আবার আমাদের বেরোতে হবে তাই সময় নষ্ট না করে খাওয়া -দাওয়া সেরে যে যার মত রুমে চলে গেল। পরদিন ৯ই মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে আমরা আমাদের নির্ধারিত লাক্সারি বাসে করে রওনা হলাম সীমাচলম লক্ষ্মী নরসিংহ মন্দির দর্শনে। দেড় ঘন্টায় আমরা পৌঁছে গেলাম মন্দির সন্নিকটে। বাস থেকে নেমে এগিয়ে গেলাম মন্দির অভিমুখে। অসংখ্য পূর্ণার্থীর ভীড় পেরিয়ে পৌঁছালাম মন্দিরে। আবার কেউবা ভিড় দেখে নিচে অপেক্ষায় রইলো। সেখানে দেখলাম পূজার অর্ঘে প্রদত্ত শত শত গোটা নারকেল জমা পড়লে অবিরত তা ভেঙ্গে দ্বিখন্ডিত করে রাশ করে রাখা হচ্ছে। তার পাশেই একটু উপরে দেখলাম গাছের গোড়ায় মা মনসা দেবীর বিগ্রহ। সেখানে ততটা ভিড় না থাকায় প্রাণ ভরে করলাম দর্শন। নিজ নিজ হাতে তুলে নিলাম প্রসাদ। নিচে এসে অন্যান্যদের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। সবাই নেমে এলেই বাস ছেড়ে রওনা হলাম কৈলাসগিরির উদ্দেশ্যে। ধীরে ধীরে আমরা উঠে চলেছি পাহাড়ের উপরে। যেতে যেতে সমুদ্রের তীরবর্তী দৃশ্য দেখে মন উৎফুল্ল হয়ে উঠল। পাহাড়ের চূড়ায় উঠে সকল দৃশ্য দেখে হলাম মুগ্ধ। দেখলাম সেখানে সৌন্দর্য্যায়নের জন্য চলছে সংস্কার। রাজমিস্ত্রিরা তখন নিজ নিজ কর্মে লিপ্ত। পরিকল্পিত কাজের লক্ষণ দেখে স্পষ্ট বুঝলাম সংস্কার সম্পন্ন হলে সেখানকার সৌন্দর্য হয়ে উঠবে আরও বেশি আকর্ষণীয় ও মনমুগ্ধকর। তখন চারিপার্শ্বের দৃশ্য দেখে হয়ে পড়লাম কিংকর্তব্যবিমূঢ়। একদিকে রোপওয়ে অন্যদিকে টয় ট্রেন। এদিকে সময় সংক্ষেপ তাই নানান চিন্তা ভাবনা করে টয়ট্রেনকেই বেছে নিয়ে টিকিট কেটে উঠে পড়লাম। কুড়ি মিনিটের জার্নিতে দেখলাম ভাইজ্যাক শহরের চতুর্দিকের দৃশ্যাবলী।মন ভরে গেল। সবার মুখে বারে বারে শুনতে পেলাম- “পয়সা সার্থক”। তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। ট্যুরের নির্দেশিত নিয়মাবলীতে বিভিন্ন সাইড সিন দর্শন নিজ নিজ খরচায় নিজেদের ইচ্ছাধীন তাই সংক্ষিপ্ত সময়ের মাঝে সবাই ঠিকমতো সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে না পারায় সবার সব ইচ্ছা পূরণ করতে পারল না। যারা তা পারল না তাদের জন্য দুঃখ লাগছিল কারণ এমন দৃশ্য তো সবসময় দেখার সৌভাগ্য সবার হবার নয়। এবার আমরা পাহাড় থেকে নেমে এলাম সমতলে। এবারের গন্তব্য NAVAL SUBMARINE MUSEUM এবং AIRCRAFT MUSEUM । সাবমেরিনের সামনের মেইন রাস্তায় বাস দাঁড় করাবার জায়গা নেই বলেই বেশ কিছুটা দূরে আমাদের নেমে পায়ে হেঁটে আসতে হল সাবমেরিন মিউজিয়ামে।সত্যিই অপূর্ব সংরক্ষণ দেখে মুগ্ধ হলাম। চাক্ষুষ দেখে অনেকের অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হল। সাবমেরিনের মধ্যকার যন্ত্রপাতি ও সকল ক্রুদের আকর্ষণীয় ভাস্কর্য দেখে সবাই হল মুগ্ধ। সেখানে সবাই ছবি তুললো কেউ কেউ করল ভিডিও রেকর্ডিং। আমিও বাদ গেলাম না। সাব মেরিন দেখা সম্পন্ন করে এবার গেলাম উল্টোদিকে এয়ারক্রাফ্ট মিউজিয়ামে। কি অপূর্ব দৃশ্যের সংরক্ষণ! দেখতে দেখতে এগিয়ে যেতে লাগলাম। যতই দেখছি ততই হচ্ছি মুগ্ধ! সব শেষে বাইরে বেরিয়ে দেখলাম বাইরে কয়েকটি সুসজ্জিত প্লেনের সংরক্ষণ। আমরা সবাই সেখানে ছবি তুলে যার যার নিজ নিজ স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য জমা করলাম। হোটেল থেকে বেরোবার পর সকল দৃশ্য দেখতে দেখতে সকলের মন উৎফুল্ল হয়ে উঠল। একজনের উচ্চারিত কথাটা তখন খুব ভালই লাগলো। সে বলে উঠল এই জন্যই তো প্রবাদ বাক্যটা আছে- “থাকবো না আর বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎটাকে—-” সত্যিই আমাদের জীবনের এই ক্ষুদ্র পরিসরে এটুকু দেখেই আমরা অনেকেই হয়ে উঠলাম উচ্ছ্বসিত। আজকের সব দৃশ্য প্রাণভরে দেখে রাত পৌনে দশটায় আমরা হোটেলে এসে পৌছালাম। সমাপ্ত হল ট্যুর পরিচালিত সকল সাইটসিন প্রদর্শনের নির্ধারিত কর্মসূচি। এবার আমাদের ঘরে ফেরার পালা তাই ১০ই মার্চ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত নিজ নিজ ইচ্ছায় সাইট সিন ও কেনা কাটার সুযোগ থাকলো। তাই আজ যে যার মতো ঘুরতে বেরিয়ে পড়লো ।আমরাও বাদ গেলাম না। সকাল সাড়ে নটায় আমরা একটা টাটা সুমো করে নয় জনে বেরিয়ে পড়লাম।আমরা গেলাম ইয়ারা বিচ।সে এক অপরূপ সৌন্দর্য—! সেখান থেকে গেলাম ফিশিং মার্কেট। ট্রলারে করে সমুদ্র থেকে মাছ ধরে তীরে এনে তা বিক্রির জন্য জমা করা হচ্ছে। ঘুরেফিরে দেখলাম সব দৃশ্যগুলি। সেখান থেকে গেলাম ফিস মিউজিয়াম। পোর্ট ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট।পোর্ট প্রোটেকটেড এরিয়া তাই দূর থেকে সব দেখে আশা পূরণ করতে হল। লাইট হাউজ দুপুর তিনটায় খুলবে কিন্তু ওই সময়ে আমাদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয় বলে আর যাওয়া হলো না। চলন্তাবস্থায় দেখলাম ডিফেন্স পোর্ট এরিয়া। কৃষ্ণা গেট, সামুদ্রিক জল ও গঙ্গা জলের মিক্সিং পয়েন্ট, গ্যাস পেট্রোল রিফাইন ওয়ার্ড, নভাল ডকি ইয়ার্ড, ডলফিন হিল ভিউ পয়েন্ট, অয়েল রিফ্রেশিং এরিয়া। সেখান থেকে ফেরার পথে জগদম্বা মার্কেটে এসে কিছু কেনাকাটা করে দুপুর সাড়ে তিনটায় হোটেলে পৌছালাম। আজই সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার তাগিদে সকলের মন তখন হয়ে উঠল বড় চঞ্চল।