সখি, তুমি এসেছো! আমি যে তোমার অপেক্ষায় প্রহর গুণি, সেই কবে দেখেছি সোনালী সূর্যের রক্তিম আভায় পলাশের মত লাল মুখখানি ! তুমি যে আবার আসবে তাতো ভাবিনি! তবু তুমি এসেছো, আমার শূন্য হৃদয়ের ভাঙা হাটে কি দেখছো সোহাগীনি? মনে পড়ে সেদিনের কথা? বিকালে কদম তলায় তুমি বলেছিলে, “দেখছো সূর্যটা কেমন লাল হয়ে ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে আর অন্ধকারে ছেয়ে যাচ্ছে, আমি শূকতারা হয়ে জ্বলে থাকব আলোকিত হবে তব যামিনী ! ভুলে গেছ সখি? না, ভুলিনি, আজও জ্বলে আছি শূকতারা হয়ে, আলোকিত আজও তব যামিনী !” আহা, কি শুনিলাম তব মুখে, কি হেরিলাম তব চোখে, এতো আলোর রোশনাই ঝলমল করে চারিদিক, আর নিষ্ঠুর শব্দ বাণে বিধিয়া বধির করে মোরে, শুনিয়াও শুনিনা, দেখিয়াও দেখিনা, কোথা মোর কাঞ্চন কামিনী! মনে আছে সখি? পূবের আকাশে, পূর্ণিমার চাঁদকে সাক্ষী রেখে, মোর নয়নে নয়নে নয়ন রেখে, বলেছিলে, পৃথিবী হারালেও থাকবে চাঁদ,
থাকবে সূর্য, থাকবে সবুজের সম্ভার, থাকব তোমাতে আমি,তোমার হৃদয় সাগরকে করব কল্লোলিনী! ঢেউ হয়ে আছড়ে পড়ব তোমার চরণে শুভ্র জ্যোতির্ময়ী ননী ! থাকব লতার মত তব অঙ্গে, রচিব মোদের প্রেম কাহিনী !” কিন্তু, আজ যে আমি নিঃস্ব, রিক্ত, ত্যাগী, ভোগ যে ভাসিয়াছে কালের স্রোতে, ত্যাগের আলিঙ্গন ধরেছে
জড়ায়েছে যেন বিষধরফণী ! এ যে মহাকালের দুস্প্রাপ্য প্রেমের কাহিনী, ভোগহীন প্রেমের অপরূপ কাহিনী, কলঙ্কিত ভোগে ছেয়ে গেছে, প্রকৃতির রূপ তাই তোমাতেই দেখি, দিতে পারিব না আজ কিছুই তোমারে, এই আবর্জনাময় ধরিত্রীর বুকে, শুধু গড়িতে চাই প্রেমের সখা, সখীর একরাশ ভালোবাসার শুরু থেকে শেষের কাহিনী ! ফুরায়েছে আলো, বাতাসেও দূষণ, জলে বিষাক্ত বর্জ্য, সূর্য তাই মলিন, কোন আলো জাগল প্রাণে, হেরিতে তোমায় নয়নে, জ্বালিছো প্রাণ মোর প্রাণে দিতে তা তো বুঝিনি!