আমি কে (Who am I)? (সত্যধর্ম্ম আবিষ্কর্তা ও প্রচারক মহাত্মা গুরুনাথ সেনগুপ্ত কবিরত্ন-1847-1914 মতে) আমি নিরাকার (অনন্ত সাকারত্ব ও অনন্ত নিরাকারত্বের অতীত বৃহত্তম সর্বব্যাপী সত্ত্বা) অদ্বিতীয়, অখন্ড অনন্ত অনন্ত অনন্ত গুণনিধান জ্যোতির্ময় পরব্রহ্মের সাক্ষাৎ অথচ অপূর্ণ অংশস্বরূপ যাহা স্বরূপত নিরাকার এবং পরম নিরাকার পরব্রহ্মের অংশ এবং ব্রহ্ম হইতে ত্বদীয় ইচ্ছাক্রমে তাঁহার (ব্রহ্মের) অব্যাক্ত নামক একটি গুণের মধ্যে ব্রহ্মকর্তৃক বিকার সৃষ্টির ফলে উৎপন্ন ব্রহ্মাান্ড সৃষ্টির পরে অর্থাৎ পঞ্চভূত (ক্ষিতি-অপ-ত্যেজ-মরুৎ-ব্যোম) সৃষ্টির পর ব্রহ্মের অনন্ত সরল গুণনিচয় ( প্রেম,সরলতা,পবিত্রতা,বিশ্বাস,মমতা,জ্ঞান,ক্ষমা ইত্যাদি,ইত্যাদি……অনন্ত,অনন্ত,অনন্ত) হইতে অংশত এবং অপূর্ণ মাত্রায় প্রাপ্ত ব্রহ্মময়, চৈতন্যময় সরল সদগুণসমূহ ব্রহ্ম হইতে বিচ্যূত হইবার সময়ে ব্রহ্মের ইচ্ছায় পঞ্চভূতের তমোগুণময় মৃত্তিকা প্রধান ও অপর চারটি পঞ্চভূতের 1/8 অংশ দ্বারা 99 টি স্থূল-দেহ + রজস্তমোগুণময় জলতত্ত্ব প্রধান ও অপর চারটি পঞ্চভূতের 1/8 অংশ দ্বারা গঠিত 300 টি স্থূল-সূক্ষ্ম-দেহ= (99স্থূল-দেহ+300স্থূল-সূক্ষ্ম-দেহ) +রজঃগুণময় ত্যেজ প্রধান ও অপর চারটি পঞ্চভূতের 1/8 অংশ দ্বারা গঠিত 399কম 1কোটি সূক্ষ্ম-দেহ +সত্ত্বরজঃগুণময় বায়ূতত্ত্ব প্রধান ও অপর চারটি পঞ্চভূতের 1/8 অংশ দ্বারা গঠিত 1কোটি কম এক পরার্দ্ধ (শতসহস্ত্রলক্ষকোটি) সংখ্যক সূক্ষ্ম-কারন-দেহ = (399কম 1কোটি সূক্ষ্ম-দেহ)+{(10 to the power 17) – 1,00,000,00 সূক্ষ্ম-কারন-দেহ}+ এবং অনন্ত (Infinite) সংখ্যক সত্ত্বগুণময় ব্যোম বা মহাকাশপ্রধান এবং অপর চারটি পঞ্চভৌতিক তত্ত্বের 1/8 অংশ দ্বারা গঠিত অনন্ত কারনদেহ দ্বারা জীবভাবে বদ্ধহয়। এই ত্রিবিধ দেহদ্বারা জীবভাবে বদ্ধ ব্রহ্মের খন্ডিত ও অপূর্ণ অংশ যখন দেহে বদ্ধ দেহী হল তখন ব্রহ্মহতে প্রাপ্ত অপূর্ণ চৈতন্যময় সরল সদগুণসমূহের অঙ্কুরের সাথে ত্রিবিধ দেহের যোগের ফলে বিক্রিয়ায় প্রথমে অহংবোধ উৎপন্ন হল এবং যাহা দ্বারা দেহী ব্রহ্ম অর্থাৎ পরমাত্মা হতে পৃথক সত্ত্বাজ্ঞানের উদয় হল এবং তারপর অহংবোধ হতে ক্রমশঃ কাম-ক্রোধ-লোভ-মদ-মোহ-মাৎসচর্য্যের উৎপত্তি হল এবং পাঞ্চভৌতিক গুণ সত্ত্ব-রজঃ-তমঃ গুণদ্বারা দেহী জীবভাবে বদ্ধ হল এবং আমি ও আমার ভাবের এবং পৃথক সত্ত্বা জ্ঞানের উৎপত্তি হল। স্বরূপতঃ এই অনন্ত সৃষ্টিতে এবং সৃষ্টির বাইরে যদি কিছু থাকে তাহলে তা শুধু সেই একমেবদ্বিতীয়ম্ ব্রহ্মসত্ত্বা যাহা এই মহাবিশ্বের অদ্বিতীয় চালিকাশক্তি এবং বিশ্বপ্রানসত্ত্বা যাঁর সত্ত্বায় তাঁর এই অনন্ত সৃ্ষ্টি এক হয়েও বহূরূপে সত্ত্বাবান এবং বহূর মধ্যে শুধু একক সত্ত্বার অংশ পরমব্রহ্মাংশই নানা রূপে সত্ত্বাবান হয়ে আছেন। ইহাই আত্মজ্ঞান।এই জ্ঞান যাঁর বা যাাঁদের আছে সে বা তাঁরা পরের অপকার থেকে সদাই স্বততঃ বিরত থাকেন। কেননা প্রতিটি জীবাত্মা এক এবং অদ্বিতীয় ব্রহ্মতত্ত্বদ্বারা পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে জড়িত আছেন। ব্রহ্মই সকলের অখন্ড ও মূল সত্ত্বা। উদাহরন স্বরূপ বলাযায় একটি পেয়ারার একটি খুদ্রাংশে বিকারের ফলে যদি পোকা জন্মায় তাহলে পেয়ারা খন্ডিত হয়না। ঐ পোকাগুলির খাদ্য-পরিধেয়-বাসস্থান সবই যেমন ঐ পেয়ারাই থাকে, তেমন পরব্রহ্মের একটি অতিক্ষুদ্রাংশে তাঁরই ইচ্ছায় সংঘটিত বিকারের ফলে উৎপন্ন এই ব্রহ্মান্ডের সকল প্রানী ও জীবকূলের বাসস্থান-খাদ্য-পরিধেয় সবই সেই ব্রহ্মের অংশ এবং ব্রহ্মের অংশের অংশ ছাড়া কিছু নয়। জীবাত্মা ব্রহ্মের অপূর্ণ ও খন্ডিতাংশ হলেও ব্রহ্ম স্বয়ংসম্পূর্ণ এক এবং অখন্ডই থাকেন। ব্রহ্মই নিখিল ব্রহ্মান্ডের সর্জক-বাহক-নিয়ামক। তাই যেমন একের অপকারে অপরের অপকার হয় তেমন আবার একের উপকারে অপরের উপকারও হয়। ইহাই আধ্যাত্মজ্ঞান এবং ইহাই আত্মজ্ঞান।