গঙ্গা সাগরের টানে
✍️ শিব প্রসাদ হালদার
হরিসাহা হাট ক্ষুদ্র ওস্তাগার ও পাইকারি ব্যবসায়ী উন্নয়ন সমিতির অফিস ঘরে এক্সিকিউটিভ কমিটির মিটিং চলাকালীন হঠাৎ বিজন সাহার প্রস্তাবে উল্লসিত হয়ে উঠলাম। সাথে সাথেই মনস্থির করলাম নির্ধারিত দিলেই যাব গঙ্গাসাগরে। অজানাকে জানা- অদেখাকে দেখার অদম্য ইচ্ছা নিয়ে সেদিন ভোররাতে পৌঁছে গেলাম শিয়ালদহ সাউথ স্টেশনে। ভোর চারটে সতের মিনিটের নামখানা লোকালে আমরা কুড়ি জন একত্রে একই কামরায় চেপে পৌঁছালাম কাকদ্বীপ স্টেশনে। অসংখ্য যাত্রীদের ভিড় ঠেলে ধীরে ধীরে উঁচু প্ল্যাটফর্ম থেকে নিচে নেমে এলাম। অসম্ভব ভিড়ের মাঝে কিছুটা পথ পায়ে হেঁটে এগিয়ে গিয়ে চারখানা টোটো গাড়ি ভাড়া করে উঠে বসলাম। গ্রামের সরু অলি গলি ধরে এগিয়ে গেলাম আট নম্বর লট জেটিঘাটে। ঘাটে পৌঁছানোর আগেই দেখলাম হাজার হাজার পুণ্যার্থী সমুদ্র পারের অপেক্ষায় লম্বা লাইনে দন্ডায়মান। অন্যান্যদের মত আমরাও লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। ঘন্টাদুয়েক অপেক্ষার পর অবশেষে গিয়ে উঠলাম ভেসেলে। খুব অল্প সময়েই ভেসেলে যাত্রী ধারনের সংখ্যা অতিক্রম করতেই ওপাড়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেল।
ভেসেল মুড়িগঙ্গার মাঝে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে। সূর্যের আলো সমুদ্রের জলে পড়ে চিকচিক করছে। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি ভেসেল অনুসরণ করে আমাদের সাথে সাথে উড়ে চলেছে। জলে ছুড়ে দেয়া খাবার ছোঁ মেরে নিচ্ছে তুলে। সে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। কেউ কেউ সে সব ক্যামেরাবন্দি করে চলেছে। চলন্তাবস্থায় দেখলাম মাঝ সমুদ্রে গড়ে উঠেছে বৈদ্যুতিক বিশাল স্তম্ভ। উন্নয়নের এমন দৃশ্য দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগছিল। আস্তে আস্তে সামনে এগিয়ে যেতেই দূর থেকে ঝাপসা দৃষ্টিতে সাগর পাড়ের দৃশ্য নজরে আসতে লাগলো। যতই কাছে আসছে ততই স্পষ্ট হতে লাগল। চল্লিশ মিনিটে আমরা পৌছে গেলাম কচুবেড়িয়া জেটিঘাটে। ভেসেলে দাঁড়িয়েই বিশাল সুদৃশ্য GANGASAGAR সাইনবোর্ড দেখে মুগ্ধ হলাম। সুসজ্জিত জেটিঘাটের প্রবেশদ্বারের মধ্য দিয়ে চলতে চলতে শুনতে পেলাম রবীন্দ্রসঙ্গীতের অবিরত সম্প্রচার। সেই আবেগঘন মুহূর্তে মনকে যেন দোলা দিতে লাগলো। হাঁটতে হাঁটতে রাস্তার দুই পাশের সব দৃশ্য দেখতে দেখতে বাস স্ট্যান্ডের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম।তখন মনের আনন্দে কখনও করে চলেছি ভিডিও রেকর্ডিং। কখনও বা তুলছি ভিন্ন ধরনের ছবি। একটু এগিয়েই একটা রেস্টুরেন্টে বসে আমরা সবাই সকালের টিফিনটা সেরে নিলাম।
এবার তিনটি ম্যাজিক গাড়ি রিজার্ভ করে আমরা রওনা হলাম কপিল মুনির মন্দির অভিমুখে। পথ চলতে চলতে উন্নয়নের জোয়ারে ঝকঝকে মসৃণ রাস্তার দুই পাশের মোটামুটি স্বচ্ছলতায় জীবন যাত্রার মান দেখতে দেখতে এগিয়ে যেতে লাগলাম। পথের মাঝে অতিক্রম করলাম বামনখালি, মন্দিরতলা, কৃষ্ণনগর, চৌরঙ্গী,সাগর কৃষ্ণনগর কিশলয় সংঘ, ,রুদ্রনগর, নরহরিপুর প্রাইমারি স্কুল, সাগর মহাবিদ্যালয়, রুদ্রনগর হসপিটাল, মনসাদ্বীপ, হরিণবাড়ি, নারায়নী আবাদ, বনবিবি টেম্পল, শ্রীচৈতন্য সরস্বতী মঠ, ফুলভুবি মোড়, গঙ্গাসাগর গেস্ট কমপ্লেক্স, স্বামী কপিলানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়, শ্রীধাম গঙ্গাসাগর বাজার, কলকাতা বস্ত্র ব্যবসায়ী সংস্থা, নিগমানন্দ আশ্রম, ভারত সেবাশ্রম, কপিলানন্দ আশ্রম,ওঙ্কারনাথ আশ্রম, রুদ্রনগর হসপিটাল, সাগর কৃষক বাজার,—–। ক্রমাগত দুই পাশের সামাজিক জীবন যাত্রার মান দেখে আমার ব্যাক্তিগত ধারনাটা পাল্টে যেতে লাগলো। আম্ফান, আইলা, ইয়াস, যশ এর বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের করুন দৃশ্যগুলি টিভির পর্দায় দেখে দেখে একসময় গঙ্গাসাগর সম্পর্কেও আমার ধারণা জন্মে ছিল- সাগর একটা অনুন্নত জল-কাঁদায় অধিকাংশ কাঁচা রাস্তার মাঝে দরিদ্র মানুষের বাস—! কিন্তু পথ চলতে চলতে পার্শ্ববর্তী পরিবেশ পরিস্থিতি দেখে আমার খুব ভালই লাগছিল ।যেতে যেতে এক ঘন্টা পনের মিনিটে পৌঁছে গেলাম মন্দির সন্নিকটে আমাদের গন্তব্য স্থান “আমাদের পরিবার” আয়োজিত দুই দিনব্যাপী পুণ্যার্থীদের জন্য সেবা শিবিরে।
তখন সেখানে পুরোদমে চলছে পুণ্যার্থীদের মাঝে প্রসাদ পরিবেশনের কাজ। আমরা আমাদের লাগেজ নির্ধারিত রুমে রেখেই শুরু করলাম প্রসাদ বিতরণে সহযোগিতা। মাঠের মাঝে সজ্জিত প্যান্ডেলে একত্রে পাঁচশ ভক্তকে বসিয়ে প্রসাদ প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। সকাল ন’টা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত অবিরত ধাপে ধাপে চলছে প্রসাদ প্রদান। ঘন্টাখানেক আমরা প্রসাদ বিতরণের কাজে ব্যস্ত থাকায় সমুদ্র স্নানে যেতে একটু বিলম্ব হয়ে গেল।
বেলা গড়িয়ে যাচ্ছে দেখে এবার আমরা গেলাম সমুদ্রস্নানে। দেখলাম হাজার হাজার পুণ্যার্থী গঙ্গাস্নানে ব্যস্ত। এখানে একই সাথে স্নান করছেন- পণ্ডিত মূর্খ, ধনী-দরিদ্র, মুচি মেথর, ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয়–। এই সময়ে গঙ্গার বুকে নেই কোন ভেদাভেদ। মুনি ঋষি কবি সাহিত্যিক শিল্পী দার্শনিক———- প্রত্যেকেই এই গঙ্গাসাগরের প্রবাহিত ধারায় পাপ ধুয়ে পুণ্যি লাভের লক্ষ্যে বড্ড ব্যতিব্যস্ত। স্নান সেরে সবাই মিলে গেলাম মন্দিরে পুজো দেওয়ার উদ্দেশ্যে। দাঁড়িয়ে পড়লাম বিশাল লম্বা লাইনের শেষপ্রান্তে। তখন কয়েক হাজার পুণ্যার্থী এই মাঘী পূর্ণিমার পূণ্য তিথিতে পূজার অর্ঘ্য হাতে নিয়ে লাইনে দন্ডায়মান। খুব মন্থর গতিতে লাইন এগিয়ে যেতে লাগলো। আড়াই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার পর আমরা মন্দিরের সিঁড়ি স্পর্শ করলাম। প্রচণ্ড ভিড়ের মাঝে খুব ব্যস্ততার সাথে কপিলমুনির মন্দিরে পুজো দিয়ে সন্তুষ্ট হতে হলো।
পূজা সমাপনের পর সিঁড়ি দিয়ে নামতেই বাঁদিকে নজরে পড়লো নাগা সন্নাসীদের আখড়া। সবাই মিলে সেদিকে এগিয়ে গেলাম। দেখলাম ভষ্মমাখা দিগম্বর বেশে সাধু সন্তদের। কারো মাথায় লম্বা জট। কেমন যেন রুক্ষ চেহারা। চোখ দুটি লাল। দেখলে ভক্তি লাগেনা – লাগে ভয়। তবুও হাত নেড়ে কাছে ডাকায় আমরা কেউ কেউ এগিয়ে গেলাম সেদিকে। মাথা পেতে নিলাম আশীর্বাদ। এইসব নাগা সন্নাসীদের সামনা সামনি দেখার সৌভাগ্য হলো। এই আখড়ার পাশেই মন্দির কমিটির প্রচার কেন্দ্র থেকে অবিরত পুণ্যার্থীদের জ্ঞাতার্থে ঘোষণা হয়েই চলেছে।
সারাদিনের ধকল সামলিয়ে এবার রুমে গিয়ে ঘন্টা দেড়েক বিশ্রাম নিয়ে আবার সন্ধ্যায় সবাই মিলে বেরিয়ে পড়লাম আশেপাশের দর্শনীয় দৃশ্য দেখবার উদ্দেশ্যে। ঘুরে ঘুরে দেখলাম গঙ্গাসাগর বকখালি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড এর উন্নয়নের জোয়ার। যেদিকে তাকাই দেখি শুধু উন্নয়নের ঝাঁ-চকচক নিদর্শন। বিভিন্ন ভাস্কর্য মনকে নাড়া দিল।
এবার সবাই মিলে হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে গেলাম সমুদ্র পাড়ে। যেতে যেতে দেখলাম রাস্তার দুই পাশে বিস্তীর্ণ এলাকায় নিরিবিলি পরিবেশে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন সংস্থার সুদৃশ্য হোম। চোখে পড়লো সুসজ্জিত কটেজ গুলি। দেখলাম মনকাড়া বিশ্ববাংলার সুসজ্জিত লোগো। খুবই ভালো লাগছিল। আস্তে আস্তে ঘাটে পৌঁছে দেখি- তখন মাইকে ঘনঘন ঘোষণা করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পুণ্যার্থীদের সতর্ক করে দেয়া হচ্ছে। সাগরে তখন জোয়ারের এক ভয়ঙ্কর জলোচ্ছ্বাসের রুদ্রমূর্তি। সুউচ্চ বড় বড় ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে তীরে। দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ ধরে সবাই তা প্রত্যক্ষ করলাম। এ এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা! এবার ফিরে এলাম শিবিরে। তখন প্রবেশদ্বারে শত শত পুণ্যার্থীদের দীর্ঘ লম্বা লাইন। চলছে খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণ। হাতে হাতে সামিল হলাম এই মহান সেবাকর্মে। চললো রাত এগারোটা পর্যন্ত। সন্ধ্যায় ইঞ্জিনচালিত ভ্যানে করে খিচুড়ি প্রসাদ নিয়ে যাওয়া হল সমুদ্রের ঘাটে। সেখানেও পুণ্যার্থীদের মাঝে অনেকক্ষণ প্রসাদ বিতরণ করা হলো।
সন্ধ্যায় দেখলাম প্রবেশদ্বারের বাঁদিকে পূজামণ্ডপে যার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই মহান কর্মযজ্ঞ সেই পরিমল চ্যাটার্জি মহাশয়ের গীতা পাঠ। আমি উনাকে প্রথমে চিনতাম না। সব সময়ের সঙ্গী বিজন সাহার কাছ থেকে জেনে দূর থেকে উনাকে দেখলাম। প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। তখন উনি নিজের হাতে সমস্ত পুণ্যার্থীদের প্রসাদ গ্রহণের পর এঁটো পাতা একাই তুলে তুলে টলিতে জড় করে ঠেলে ঠেলে নিয়ে চলেছেন নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলতে। উনার এমন উদার মানসিকতার পরিচয় পেয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। মনের মধ্যে তখন অনেক প্রশ্ন দানা বেঁধে উঠেছে। উনার সম্পর্কে যতই জেনেছি ততই হয়েছি মুগ্ধ! সবকিছু দেখে শুনে বুঝলাম “জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর” এই মূলমন্ত্রের একজন বিশ্বস্ত সেবক। ভাবলাম এই যুগে আমাদের সমাজের কত লোক একটু সেবা করলেই প্রচার করে তার থেকে অনেক বেশি এবং এমনটা করে যেন তারা পায় পরম তৃপ্তি। কিন্তু পরিমল বাবুর ক্ষেত্রে আমি বিভিন্ন দিক থেকে দেখে শুনে এবং ব্যক্তিগতভাবে আলোচনার মাঝে স্পষ্ট বুঝেছি উনি এই আত্মপ্রচারের সম্পূর্ণ বিপক্ষে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞের আর্থিক সংকুলান উনার একার হলেও উদাত্ত কণ্ঠে প্রচার করেন -“এই কর্মযজ্ঞ আমার একার নয়- এটা “আমাদের পরিবার” যা তের বছর আগে স্বর্গীয় রাধা মাধব সাহা নামাঙ্কিত ব্যানার নিজ হাতে গ্রহণ করে আজও উনার নাম অক্ষুন্ন রেখে সেবা করে চলেছেন। প্রতিবছর মাঘী পূর্ণিমার পূণ্য তিথিতে দুই দিনব্যাপী এই মহান কর্মযজ্ঞে হাজার হাজার ভক্তদের মাঝে প্রসাদ প্রদান করে পেয়ে চলেছেন পরম তৃপ্তি। আর সেই দিন থেকেই পরিমল বাবু পাশে পেয়েছেন সাগরের বাসিন্দা সুশান্ত ভূঁইয়া মহাশয়কে।যার আন্তরিক তত্ত্বাবধানে সমগ্র অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল সহ সকল ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে সুসম্পন্ন করতে তদারকি করে পাশে থেকে চলেছেন। এই মহান কর্ম যজ্ঞের মাধ্যমে মানুষের সেবায় উদ্যোগী হতে সার্বিক সহানুভূতি পেয়েছেন সবসময়ের ছায়াসঙ্গী উনার অর্ধাঙ্গিনী শ্রীমতি মিতা চ্যাটার্জী মহাশয়ার। যার নিরলস প্রচেষ্টা সর্বদাই অনুপ্রাণিত করেছে পরিমল বাবুকে। “ত্যাগে মেলে পরম তৃপ্তি” এই বাণীর মূল উপলব্ধিতে ধীরে ধীরে এসেছে এমন সেবায় সাফল্য। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত সকল পুণ্যার্থীদের একটাই প্রত্যাশা- এমন মহান প্রচেষ্টায় রুপদানের পরিধি ও পরিসর দিনে দিনে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে মানুষে মানুষে গড়ে উঠুক এক পবিত্র মেলবন্ধন!!
পরদিন সকালে বাড়ি ফেরার পালা। সকালে সবাই মিলে আবারও একবার সমুদ্র স্নান সেরে নিয়ে ব্যস্ততার সাথে প্রসাদ গ্রহণ করে বাড়ি ফেরার তাড়ায় প্রস্তুত হলাম। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান সম্পূর্ন সমাপ্ত না হওয়া অবস্থায় বাড়ি ফিরতে যেন মন চাইছিল না। তবুও ঘরে ফেরার তাড়নায় আসতে হলো। আমরা তিনখানা টোটো গাড়ি ভাড়া করে সাড়ে চার কিলোমিটার পেরিয়ে আসতে আসতে দেখলাম নাগ মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন, মনসা মন্দির, চৌরঙ্গী যুব কল্যাণ হাইস্কুল—– অবশেষে এলাম বেনুবন লঞ্চ ঘাটে। পৌঁছে দেখি হাজার হাজার পুণ্যার্থী প্রখর রৌদ্রে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে। আমরাও দাঁড়িয়ে পড়লাম। মন্থর গতিতে লাইন এগিয়ে দুই ঘন্টা পর গিয়ে উঠলাম লঞ্চে।তখন ভাঁটা চলছে। তাই খালের জল ছিল কম। তবুও তার মাঝে রওনা হল নামখানার উদ্দেশ্যে। চেমাগুড়ি খাল দিয়ে আধা কিলোমিটার এগোতেই আমরা পড়লাম সমুদ্রের মাঝে। তখন সমানে ছুটে চলেছে একই গতিতে। এক ঘন্টা দশ মিনিটে আমরা পৌঁছে গেলাম নামখানা জেটি ঘাটে। চলন্তাবস্থায় দেখলাম কত মাছ ধরা ট্রলার দাঁড়িয়ে। খুব সুন্দর লাগছিল। তার মধ্যে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকে আগত অনেক ট্রলার চোখে পড়ল। ফেরিঘাট থেকে তীরে উঠে টোটো করে আমরা চলে এলাম নামখানা স্টেশন। এবারও আমরা সবাই মিলে একই কামরায় উঠে রওনা হলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে শিয়ালদহ অভিমুখে। চলন্তাবস্থায় মাঝে মাঝে মনে পড়তে লাগলো গঙ্গাসাগরের দৃশ্যগুলি। তখনও যেন মনে হতে লাগলো – “দেখেও হ’লো না দেখা শেষ–” মনে মনে ভাবতে লাগলাম-
আবার আসবো কবে ফিরে,এই গঙ্গাসাগর তীরে—-!!
—::××::—