ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা
✍ মধুমিতা
সূচনা পর্ব ——
ভগবানের বন্দনা
“হে মহানায়ক! হে বীর!! তোমাকে আমার শত কোটি প্রনাম।”
নেতাজী……………
নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু…. ভারতের স্বাধীনতার রূপকার , নেতাজী আমার ভগবান, আমার আদর্শ, আমার গুরুদেব, আমার জীবনের সত্য ।নেতাজী অনন্য ,অদ্বিতীয়, অপ্রতিরোধ্য , অতুলনীয় , অসীম ।নেতাজী সূর্যের ন্যায় জ্বলন্ত এক নক্ষত্র। তিনি মাতৃ আরাধনায় মগ্নরত এর দৃঢ় সমকল্পিত সন্তান।শুধু ভারতে নয় সমগ্র বিশ্বের ইতিহাসে এমন নেতা – এমন সেনানায়কের নজির আর একটাও নেই । নেতাজীই আমাদের শিখিয়েছে স্বাধীনতা ভিক্ষা করে না ছিনিয়ে নিতে হয় , নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই করতে হয়।আমি এটা দাবি করে বলতে পারি যে নেতাজী পৃথিবীর সর্বশেষ্ঠ নেতা।যেখানে সারা ভারত ব্রিটিশদের কাছে বন্দি ,সেখানে স্বয়ং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নেতাজির নামে কাঁপতো।দেশ স্বাধীনের পরবর্তী কালে ব্রিটিশরাও স্বীকার করেছে যে তাদের দেশ ছাড়ার কারণ ছিলেন নেতাজী।তাঁর নেতৃত্ব, বীরত্ব, দেশপ্রেম,সততা, স্বচ্ছতা ও মমতাবোধ অতুলনীয়।যখন অন্য সব রাজনীতিবিদরা ঠান্ডা ঘরে পায়ের উপর পা তুলে আনন্দ উপভোগ করছেন তখন নেতাজী মাইলের পর মাইল অজানার পথে পারি জমাচ্ছে শুধু মাত্র ভারতবর্ষ কে শৃঙ্খলমুক্ত করার জন্য।তাঁর মনে ছিল ভারতমাতার জন্য অত্যন্ত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা।তিনি বলেছিলেন –
“শোনো, আমি জীবনে কোনোদিনই রাজনীতি করিনি।যা দেখছো এ আমার মাতৃসাধনা, আমার কাছে গর্ভধারিনী জননী, জননী জন্মভূমি , আমার মা কালি একই। দেখতে দেখতে এই তিন আমার এক হয়ে যায়।”
স্বার্থপর ও চক্রান্তকারী নেতাদের দ্বারা বারবার লাঞ্ছিত হয়েও তিনি নিজের সংকল্পে দৃঢ় ছিলেন।তিনি ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে ২১ শে অক্টোবর সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ সরকার গঠন করে বৃষ্টিশ সরকারের ভীত নাড়িয়ে দিয়েছিলেন।তিনিই অখণ্ড ভারতের প্রথম প্রথানমন্ত্রী।সামরিক ইতিহাসে এ কথা খুবই দুর্লভ যে ,কোনো সেনানায়াকের অধীনস্থ সৈনিকরা তাঁকে ভগবান জ্ঞানে পূজো করেন।আজাদ হিন্দ ফৌজের সেনাদের হৃদয়ে ছিল নেতাজির জন্য গভীর শ্রদ্ধা,ভক্তি ও অনন্ত ভালোবাসা।তারা নেতাজির নাম নিয়ে হাসতে হাসতে মৃত্যুকে সঙ্গী করে নিত।সৃষ্টি লগ্ন থেকে পৃথিবীর ইতিহাসে যেসব নেতা বা সেনানায়াকের নেতৃত্বতার উদাহরণ আছে,
তারমধ্যে নেতাজির নেতৃত্ব সর্বশেষ্ঠ।ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজির অবদান বোঝাতে গেলে দুটো লাইনের খুব দরকার – “সোনার মতোই আগুনে না পুড়লে নিখাদ দেশপ্রেমিক হওয়া যায় না, আর নিখাদ দেশপ্রেমিক না হলে জনকল্যাণ কারী দেশ নেতা হওয়া যায় না।”
জাপানের কাছে আত্মসমর্পণকারী ব্রিটিশ-ভারতীয় সৈনিক – যারা বহুকাল ধরে ব্রিটিশদের আনুগত্য করে এসেছে, তারাই নেতাজীর নিখাদ দেশপ্রেম ,নির্ভীক বক্তৃতা শুনে দেশকে স্বাধীন করার জন্য ব্রিটিশদের বিরুদ্ধেই অস্ত্র তুলে নেয়।
তিনি তাঁর সৈন্যদের উদ্দেশে বলেছিলেন –
“ভারত ডাকছে।রক্ত ডাক দিয়েছে রক্তকে।উঠে দাঁড়ায়,আমাদের কাছে নষ্ট করার সময় নেই।অস্ত্র তোলো……..
যদি ভগবান চান, তাহলে আমরা শহীদের মৃত্যু বরণ করবো।”
সত্যি বলতে নেতাজিকে সম্পূর্ণ উপস্থাপন করা কারোর পক্ষেই সম্ভব নয়।কারণ তিনি অতুলনীয়, অনন্য। তাঁর একটাই তুলনা হয় – তিনি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু।তাও আমি যথা সম্ভব চেষ্টা করবো নেতাজির অবদানগুলি সবার সামনে তুলে ধরার।তিনি দেশের জন্য দেশবাসীর জন্য যা – যা করেছে সেগুলি তুলে ধরার চেষ্টা করবো ।তারপর আপনারাই ঠিক করবেন তার প্রাপ্য কতটুকু??আর কতটুকুই বা আমরা তাকে দিয়ে পেরেছি? আজ স্বাধীনতার ৭৪ বছর পরও সেই মানুষটি তাঁর সম্মানটুকু পেলো না।পেলেও না INA এর কোনো সৈনিক তাঁদের উপযুক্ত প্রাপ্য সম্মান।দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকার ঘোষণা করেন , কোনো সামরিক ব্যারাকে তাঁর ছবি যেন টাঙানো না হয়।যার জ্বলন্ত চিন্তাভানার চাই দিয়েই Indian army র জন্ম তাঁর ছবিই নাকি সামরিক ব্যারাকে রাখা যাবে না , তাকে সামরিক অধিবাদন(স্যালুট) দেওয়া যাবে না।
নেতাজির প্রতি অনেক অন্যায় হয়েছে।আমাদের উচিত নেতাজির ব্যাপারে তৎপর হওয়া। অতীতে যা হৈছেবতা আমরা বদলাতে পারবো না কিন্তু বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এ যাতে ওনার প্রাপ সম্মান টুকু পায় সেটার চেষ্টা আমরা করতেই পারি।।
(এরপর ক্রমশঃ…….)