” ভরা কোটাল “
রণজিৎ মন্ডল
শুকিয়ে খট খটে ছোট উঠোন
মুচ মুচে গোলপাতার চালে, কক কক মুরগীর ডাকে মাতন
সারা বাড়ী,
সন্ধ্যায় বাজানের কোলে শুয়ে ছোট্ট রাবেয়া কয়,
দেখ বাপ চাঁদের আলো চালের ফাক
দিয়ে ঝক ঝকে করে দেছে তোর দাড়ি।
সত্যিই তো ঠিক যেন বাবুই পাখির বাসা
গোবরে মাথা পুতে দেওয়া জোনাকির আলো মারকারী।
বাজান, বড় হলি আমি এই আলোয়
করতি পারবো না লেখা পড়ি?
পারবি মা, কিন্তু সামনে যে ভরা কোটাল, তায় আবার শুনতিছি আসছে
ঘুর্ণি ঝড় যশ, কে জানে কত ভাঙবে
ঘর বাড়ী!
তুই ভয় করিস নে বাজান, আমরা তেখন থাকবো গিয়ে ঐ ইস্কুল বাড়ী।
কিন্তু কি হবে তোর লেখি পড়ি! আবার
আসব ফিরি,
ঝড় থামবে না বুঝি, কোটালের জল
নামবে না বুঝি, সব থেমে গেলি আমরা
আসবো ফিরি আমাদের বাড়ী!
এই দুদিন আগেও কত স্বপন দেখছিল
রাবেয়া, আমার রাবেয়া কোথায় গেল
ভাসি, কেন আসলো না আমার
রাবেয়া কোলে ফিরি!
কোটাল তারে জনমের মতন নিয়েছে
কাড়ি।
হায় আল্লা, কি নিয়ে থাকবো, কারে
নিয়ে বাঁচবো, ভেসে গেছে ঘরবাড়ী,
আর জলের ঢেউ এক ঝাপটায় কেড়ে
নিল আমার রাবেয়ারে,
সে যে বলেছিল, বাজান ঐ চাঁদের আলোয় করবে লেখাপড়ি।
হায় আল্লা, ভরা কোটাল আমার সব
নিল কাড়ি!
–~০০০XX০০০~–