রবি যাপন
স্মৃতি চট্টোপাধ্যায় সমাদ্দার
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধন ডোর
# ব্যক্তিগত গদ্য
আমার ঘুম ভাঙানিয়া তুমি। সারারাত তুমি আমায় রেখে দাও বুকের ওমে। আমিও সারারাত শিউলি সুবাসের,কেয়া,বকুলের সুগন্ধে আচ্ছন্ন থাকি। তুমি বলো ” ওই আমার সুধা হাসে “.. বুক থেকে মুখ তুলে দেখি তুমি হারিয়ে গেছো। আমাতে আমি হারা আমার নয়ন আপনি ভেসে যায় জলে। আমি সাজি নিয়ে বাগানে যাই। অমনি দেখি তুমি উষার বৈশাখী হাওয়ার মতো হাসি নিয়ে বলছ ” সুধা বলে ” ফুল তুলিতে ভুল করেছি, প্রেমের সাধনে “।আমি বলি ওগো আমার আঁধার রাতের রাজা তোমার সুধা নিত্য তোমায় পায় — আমাকে এত হেলা ফেলা সারাবেলা কেন?তুমি মিলিয়ে যাও কোথায় কোন খানে!
আঁচল দিয়ে মুখ ঢাকি গো নিঠুর। তারপর এ কোণের ধুলোবালি ও কোণে রাখি। জলছড়া দিই, আসন পাতি। শ্বেতপাথরের বুক পাথরে মল্লিকা,চামেলি, বেলি রাখি। সাদা আঁচল ছিঁড়ে চোখের জলে ভিজিয়ে ঢেকে দিই সে ফুল। ‘ কোথাও কিছু আঘাত লাগে পাছে ‘…
বেলা ঢলে, সন্ধ্যে আসে। আমি চন্দন গন্ধ পাই, বুঝি তুমি আমার পাশটিতে এসে দাঁড়িয়েছো। একি সুগন্ধ হিল্লোল লাগে হৃদি মাঝারে! তুমি তোমার একটি হাতের উষ্ণতায় রাখো আমার বাঁ হাতটি। অন্য হাতে আমার চিবুক তুলে বলো ” ওই দেখো সন্ধ্যা তারাটি একটু একটু করে চলেছে দিনের পানে। ধীরে নীরবচারী রজনী ঊষার কোলে যেই আশ্রয় নেবে অমনি ঊষালগ্ন বরণ কোরে নেবে সাঁজতারাকে শুকতারা রূপে। “..
তুমি বলো “সখী এত দু:খের কি আছে? সেই কোন সুদূরে তুমি যে দিন অমল হয়েছিলে সেইদিন থেকে এই আমি যে তোমার আমি হয়ে তোমার সাথেই আছে। বুঝতে পারো না? আমি বলি ” কাজের দিনে নানা কাজে, থাকি নানা লোকের মাঝে ” বুঝতে পারিনে তুমি আছ আমার সনে। তুমি মাথায় রাখো হাত, মুখ নামিয়ে আনো আমার আনো আমার চোখের পাতায়। বলব গো — আমার দু:খ রাতের রাজা আমি তোমারি নাম বলব নানা ছলে। আমার মনের একতারাতে বিনা প্রয়োজনে ই তোমাকে ডেকে চলব সুরে, দূরে কোন সুদূরে। এক অঞ্জলি মল্লিকা তোমার পায়ে দিয়ে প্রণাম করতেই তুমি বললে ” কি ভাবছ গো? আমি আছি তুমি নাই কালি নিশি ভোরে “…
আমি ভেসে গেলাম। ডুবে গেলাম তোমার প্রেম সুধারসে। আমি বলি” দাও হে আমার ভয় ভেঙে দাও “…তুমি দুহাতে আমায় বুকে বেঁধে বলো —-
” আমি যে তোমার দু:খ জাগানিয়া গো। তোমার তৃপ্তি, অতৃপ্তি, মুক্তি, বাঁধন সবেতে আমি আছি সখী। সেই এক শাঁখ বাজা সকালে তোমার সাথে আমার দেখা, আর কদম কেশর ঝরা শাওন রাতে তোমার সঙ্গে আমার মিলন যে হয়ে গেছে। তোমার মাটির প্রাণের মানুষ শাওন হোলো বলেই তো তাকে বুক পাঁজরে রেখে দিলাম। তুমি শুনতে পাও না সখী তার সুর? সে যে নিত্য নিশি জাগে আকাশ ভরা সূর্য তারা বিশ্বভরা প্রাণের সাথে। “…
আমি বলি আমাকে কবে কোরবে তোমার বুকের তলার পিদিম? তুমি বিশ্ব চরাচর লুপ্ত করা ভুবন মোহন হাসি হেসে আমার শ্রবণে মুখ রেখে বলো
” যে দিন আকাশের তারা মাটির বুকে ফুটে উঠবে, তিমির দুয়ার খুলে আসবে বিশ্বজন জননী, ভুঁইচাঁপা ফুল পিষে যাবে না পায়ের আঘাতে, সেই দিন ই তোমার পিদিম জ্বলবে আমার বুকের পাঁজরে “…..
আমি উদাস চোখে আকাশ পানে তাকিয়ে দেখি আমার প্রিয় চেয়ে আছে আকাশ ভ’রে। বলি — তোমায় নতুন করে আমি পাব ই পাব প্রতিদিন প্রাতে, রাত্রি নিশীথে। আমি যে নিশিদিন তোমাকে ভালোবাসি, “তুমি অবসর মতো বাসিয়ো “…
চোখেরজলে বুক ভাসিয়ে আমি বসে থাকব সেই দিনের আশায় — যে দিন তোমার পিদিম হয়ে জ্বলব। তুমি এমন কেন গো? কেন? কেন?
কেন “, ”
#তোমার_মতো_এমন_টানে_কেউ_তো_টানে_না”..
–~০০০XX০০০~–