পরকীয়া
✍ ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়
রঞ্জন চেঁচাতে থাকে “আটটা পাঁচ এ লোকাল ট্রেনটা ছাড়ে বর্ধমান থেকে। ওটা ধরতেই হবে। এখন তো হুগলীর প্রত্যন্ত এক গ্ৰামে বদলি হয়ে এসেছি
ইউ,বি,আই এর ডেপুটি ম্যানেজার হয়ে দায়িত্ব টাও বেড়ে গেছে”।
শমীক সরকার বলে “ও। তাই বুঝি?
“দূরদূর। মাথা তোলা যায় না। একে তো স্টাফ কম ।তার উপরে যে কজন আছে অনেকটা পায়া ভাঙা টেবিল চেয়ারের মতো। কম্পিউটারে কেউ দক্ষ নয়। পদে পদে ভুল। আর সেই ভুল শোধরাতে
হিমশিম খাই “।
শমীক সরকার পাশের বাড়ির মালিক।উনি সম্প্রতি অবসর নিয়েছেন।
কতবার ভাবে সকাল সকাল বাড়ি যাবো। তা আর হচ্ছে কোথায়। সকালে বৌ এর হাঁড়ি মুখ দেখে এসেছে। আর বৌ তনিমা। সেও এক সমস্যা। ভীষণ সন্দেহবাতিকগ্ৰস্ত। এই লোনের ব্যাপারে বা অফিস এর কেউ মানে মহিলা আর কি যদি ফোন করেছে তো তার মাথা খারাপ হয়ে যায়।
হন্তদন্ত হয়ে ব্রাঞ্চে ঢুকলো।
অফিসে ধনঞ্জয় বলে “রঞ্জন দা আমাদের হিরো।এখনো বেশ টানটান চেহারা।কে বলবে তোমার বয়স হয়েছে”?
রঞ্জন বলে “কোথায় আর বয়স রে ভাই। এই সবে পঞ্চাশ”।
ধনঞ্জয় হাসে। বলে “কে বলবে যে তুমি আমার থেকে বড়ো। আমাকেই তো বড়ো মনে হয়।”
রঞ্জন মনে মনে হাসে।ভাবে “সত্যিই আমি এখনও বেশ সুন্দর। নাহলে গার্গী ম্যাডাম অমন ফ্যান হয় কী করে?”
ঠিক সেই সময় ই ফোনটা বেজে উঠলো। ওপার থেকে আওয়াজ এল “অফিসে বুঝি?”
রঞ্জন দেখলো ব্যাঙ্কের সবাই এর চোখ ওর দিকে।সামনের ছোট্ট বারান্দা র দিকে এগিয়ে গেল ও।
বললো “আর কী!এখন ভিড় কম আছে। সবসময় ফোন ধরা যায় না”।
ওপার থেকে বললো “আজ একটু সকাল সকাল বের হবেন প্লিজ। আমরা দুজনে চারটে কুড়ির বাসটা ধরবো। তারপর ব ইমেলায় যাবো।কী!,আসবেন তো?
রঞ্জন আমতা আমতা করে।
তারপর বলে “আচ্ছা। চেষ্টা করছি। তবে কথা দিতে পারছি না।”
ওপারে তীব্র অভিমান “নাআআআ। প্লিজ।আমার ভীষণ ইচ্ছে আপনার সাথে ঘুরবো আজ”
রঞ্জন এই গলার মাধুর্যে কেমন যেন হয়ে যায়।ফোনটা কেটে দিয়ে কম্পিউটার নিয়ে বসে। ধনঞ্জয় ঠিক তাকিয়ে আছে।
গুনগুন করে গান গাইছে রঞ্জন
“এতদিন কোথায় ছিলে/
পথ ভুলে তুমি কি এলে/
দখিনা বাতাস তুমি/
শোনালে যে গান গাহিয়া””
ধনঞ্জয় বলে “রঞ্জনদা। বেশ পরকীয়া পরকীয়া গন্ধ পাচ্ছি।ফোনটা করেছিল কে? সহযাত্রী গার্গী ম্যাম নাকি?”
রঞ্জন মনে মনে ভাবে “শালার সবদিকে শকুনির নজর।”
না।চারটে কুড়ির বাসটা ধরা গেল না।মনটাই খারাপ হয়ে গেল রঞ্জনের।এবার গার্গী টা অভিমান করবে।কী করা যাবে।ঠিক এইসময় ফোনটা বেজে উঠল “কথা বলবেন না।ইসস।আমার কত ইচ্ছা ছিল ব”ই মেলা যাবো।ঘুরবো আপনার সাথে।ফুচকা,পকোড়া খাবো।আপনি খুব খারাপ”।
গার্গী এক নিঃশ্বাসে বলে যায়।রঞ্জনকে বলার সময় দেয় না।তারপর ই রঞ্জন বলে “ওসব আমি খাই না।আমার তো সুগার।তুমি খেও।আমি খাওয়াবো”।
ওপার থেকে খিলখিল হাসি “সত্যিইই”
রঞ্জন কেমন যেন হয়ে যায়।বিবাহিত রঞ্জনের কেমন একটা যেন ভাব আসে।
ট্রেনে উঠে জানালার পাশেই সিট পায় রঞ্জন।ভাবতে থাকে বিগত জীবনের কথা।স্ত্রী তণিমা।।সুন্দরী ছিল একসময়।এখনও তার ছাপ স্পষ্ট।ওর জন্য একদিন পাগল হয়ে যেত রঞ্জন।আর তারপর কোথায় যে হারিয়ে গেল সেই উষ্ণতা।
বাড়ি ফিরতে ন’টা বাজল।তণিমা বলল “কী ব্যাপার !আজ এত দেরি?”
রঞ্জন বললে “হ্যাঁ।আমি হাওয়া খেতে বেরিয়েছিলাম তো।”
তণিমা বলল “না। আজকাল তোমাকে অন্যরকম লাগে।”তণিমার এই স্বভাব।রঞ্জনকে সন্দেহ করা।একটি ছেলে,একটি মেয়ে নিয়ে রঞ্জনের সাজানো সংসার।অর্থনৈতিক অবস্থাও বেশ উন্নত।তবু তণিমা এই বয়সে এসেও রঞ্জনকে সন্দেহের চোখে দেখে।
রঞ্জনের হৃদয়ের এই একাকীত্বের মধ্যেই কখন গার্গী দখিনা বাতাসের মতো প্রবেশ করেছে।কত ছোট।তবু রঞ্জনের মনটা ওদিকেই চলে যায়।তণিমা টাকা আনা পাই এর বাইরে আসে না কখনও।অফিসের জামাকাপড় ছেড়ে স্নান ঘরে গেল রঞ্জন।ফ্রেস হতে হবে।তণিমা রান্নাঘরে চা করছে।ঠিক সেই সময় ফোনটা বেজে উঠলো।
“হ্যালো।কে বলছেন” শান্ত হয়ে বললে তণিমা।
ওদিক থেকে ভেসে এল সুরঝঙ্কার।”রঞ্জনদা আছেন।একটু ওকে দিন না”।
“আপনার নাম” আরো গম্ভীর তণিমা।
“আমি গার্গী।আসলে আমি একটু চিন্তা য় আছি।এদিকে ঝড় হল।উনি ঠিক বাড়ি পৌঁছাতে পারলেন কিনা।আচ্ছা।ভালো থাকবেন।”
গার্গী কথা গুলো বলে ফোনটা কেটে দিল।গার্গী মৈত্র।সুন্দরী।শিক্ষিতা।বয়স বত্রিশ।স্কুলে পড়ান।খুব সুন্দর মনের মানুষ।ভালো গান জানেন।সহযাত্রী রঞ্জনকে ওর অসম্ভব ভালো লাগে।এত স্মার্ট পুরুষ এর আগে তো দেখে নি গার্গী।প্রথম প্রথম দুজনে কথা বলতে ইতস্ততঃ করতো।তারপর একদিন গার্গী নিজেই বলল “কাল আর আসব না”।
রঞ্জন বলল “কেন?আসবেন।আপনি না এলে কেমন ফাঁকা লাগে।”
গার্গী খিলখিল করে হেসেছিল।বলেছিল “সত্যি!”
রঞ্জন আর গার্গী ভালোবাসা তে আবদ্ধ হয়েছে।সকলেই বুঝতে পারে ওদের চালচলনে।দুটো মানুষ ই সকলের খুব প্রিয়।গার্গী জানে রঞ্জন বিবাহিত।সংসারী।তবুও পাগলের মতো ভালোবাসে রঞ্জনকে।
গার্গী র ফোন আসা নিয়ে তুমুল অশান্তি হয়েছে সেদিন।তণিমা বলে “ভালো ড্রামা করতে পারো তো।এখন নতুন প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছ।”
রঞ্জন প্রথমে ব্যাপারটা হালকা ভাবে নিয়েছিল।বলল “না।মেয়েটি সহযাত্রী।আমাকে খুব ভালোবাসে।আর অনেক ছোটো আমার থেকে।প্রায় আঠারো বছরের।”
বাস্তবিক তখন ও তেমনভাবে ওদের প্রেমপর্ব অগ্ৰসর হয় নি।তণিমার কথাগুলো যেন রঞ্জনকে সম্বিত এনে দিল।
আজ ব্রাঞ্চে ভিড় কম।ধনঞ্জয় কে ডাকে রঞ্জন ।”ধনঞ্জয়।যাও বিস্কুট কিনে আনো।জমিয়ে কফি খাওয়া যাক।”
ধনঞ্জয় আমুদে মানুষ।বললে “রঞ্জনদা।মেজাজ তো দেখছি একেবারে উড়ছে”।
রঞ্জন বুঝতে পারে ।তাছাড়া বাসে যেভাবে রঞ্জন আর গার্গী পাশাপাশি থাকে সবাই আন্দাজ করে ব্যাপার টা।
রঞ্জন বলে “মেয়েটা খুব সুন্দর স্বভাবের।মিস্টি লাগে আমার”।
ধনঞ্জয় ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানায়।
গার্গী কে সেদিন ট্রেনে দেখতে পেল না রঞ্জন।এদিক ওদিক খুঁজতে থাকে দুটো চোখ।এইসময়টা অপেক্ষা করে থাকে রঞ্জন।দুচোখ ভরে দেখবে শুধু।আর তো কিছু দিতে পারবে না ও গার্গী কে।মনটা অজান্তেই ভারাক্রান্ত হয় যেন।মনে মনে ভাবে “কী অপূর্ব প্রেম দিলেন বিধাতা।কিন্তু স্ত্রী,সংসার সব অবহেলা করে এখানে আসা তো যাবে না।আর এখন তো অপরাহ্ন।কী প্রয়োজন।আর নয়।এবার একটু সরিয়ে নেবে নিজেকে।
ট্রেন থেকে নেমে বাস ধরার তাড়া।হঠাৎ পিছুডাক “রঞ্জনদা”।
রঞ্জন অবাক হয়ে যায়। বলে “কোথায় ছিলে?”
গার্গী ছুট্টে এসে রঞ্জনকে প্রণাম করে।রঞ্জন অস্থির হয় “আরে।কী ব্যাপার।আজ এত সাজুগুজু কীসের”?
গার্গী জানায় “আমার আজ জন্মদিন”
রঞ্জন শুভেচ্ছা জানায় ।বলে “তাহলে তো উপহার দিতে হবে আজ।চারটে কুড়ির বাসটা আজ ধরবো”।
এক অনাবিল আনন্দে ভাসে দুটো হৃদয়।
আজ স্কুলে সহকর্মীদের মিষ্টি খাইয়েছে গার্গী।সবাই মিলে একসাথে পালন করেছে ওর জন্মদিন।এবার বাড়ি ফেরার পালা।চারটে কুড়ির বাসে রঞ্জনদা।রঞ্জন বললো “খুউউব সুন্দর দেখাচ্ছে আজ।আমার মিষ্টিটা”।
আজ গার্গী কাজল পরেছে।রঞ্জনের দিকে তাকাতেই রঞ্জন যেন পাগল হয়ে গেল।আর ঠিক তখন ই কড়াং করে বাজ পড়ার শব্দে চমকে উঠলো গার্গী।
বহুদিন পর এমন বৃষ্টি।সাথে ঝড়ের দাপট।”বাজ পড়লে ভীষণ ভয় করে রঞ্জনদা”।গার্গী র কথায় আরো কাছে আসে রঞ্জন।বলে “দূর পাগলী।আজকের দিন টা আনন্দ করো।ভয় কী!আমি আছি তো।”
গার্গী ছলছল চোখে রঞ্জনের বুকের কাছে চলে আসে।হাতটা টিপে ধরে।বলে “হ্যাঁ।আছেন তো।”
বাস থেকে নেমে প্লাটফর্ম এর দিকে যাচ্ছে ওরা।ভীষণ ঝড়।উড়িয়ে দিচ্ছে সবকিছু।কখন যেন আঁকড়ে ধরেছে গার্গী রঞ্জনকে।রঞ্জন বলে চলে “ওই ওভার ব্রীজের কাছে যেতে পারলেই ব্যাস।আর চিন্তা নেই।”
বৃষ্টির জলে পুরো ভিজে গেছে গার্গী।কাঁপছে ও।আলুলায়িত চুল।ভিজে ভ্রু পল্লব।কাজলভরা চোখের মায়া।সাথে কাপড়টা লেপ্টে বসে গেছে শরীর এ।দুজনের মুখেই আজ কোনো কথা নেই।প্রকৃতি আজ ওদের অনেক কাছে এনে দিয়েছে।রঞ্জনের মনে হয় এই আমার প্রেয়সী।এর জন্য সমাজ সংসার সব মিছে।
তণিমা র সাথে রঞ্জনের বিয়েটা ছিল অন্যরকম।তণিমার বাবা শিবপ্রসাদ সামন্ত ছিলেন রঞ্জনের শিক্ষক।মাস্টারমশাই কে শ্রদ্ধা করত রঞ্জন।শুধু ও কেন।রঞ্জনের বাবাও বলতেন “শিবপ্রসাদ বাবু ভগবান তুল্য”।সেই শিবপ্রসাদ বাবু যখন রঞ্জনের বাবার হাতদুটি ধরে বললে “পুত্রবধূ হিসাবে আমার তণিমাকে আপনি গ্ৰহণ করুন।তখন গররাজি হলেও না করা যায় নি।
গৃহবধূ তণিমা রঞ্জন ছাড়া কখনও কোনো পুরুষের কথা ভাবে নি।তবে সবসময় একটা সন্দেহ আর অবিশ্বাস তাড়া করে বেড়ায়।আর এটাই কাল হল রঞ্জনের জীবনে।
কত বুঝিয়েছে রঞ্জন।মানিয়ে চলার ও একটা সীমা থাকে।ব্যাঙ্কের দম বন্ধ করা কাজের চাপের পর একটা আশ্রয় খুঁজেছে মন।কিন্তু হায়!একবার এক মনস্তাত্ত্বিক এর কাছে নিয়ে গিয়েছিল।উনি বলেছেন “রঞ্জনবাবু।আপনি ভাগ্যবান।উনি আপনাকে এত ভালোবাসেন যে আপনার জীবনে অন্য কারো উপস্থিতি উনি সন্দেহের চোখে দেখবেন”।
পাড়া প্রতিবেশী পর্যন্ত জেনে গেছে ওদের ঝগড়ার কারণ।এমন দুঃসহ জীবন।ছেলে মেয়ে যখন ছোট ছিল তখন তবু ভালো লাগত।ওরাও এখন নিজেদের জগতে।অন্তরে বড় একা রঞ্জন।আর এখন তো গার্গী সব।
কদিন তণিমা খুব অসুস্থ হল।ওর অপারেশন হবে।গল ব্লাডারে স্টোন।রঞ্জন ছুটি নিয়েছে।তণিমা নার্সিং হোমে।গার্গী কে ফোন করে জানালো সব।রাতে ফাঁকা বাড়িতে গার্গী র সাথে বেশ কথা বলা যায়।ছেলেটা এখন কলকাতার হোস্টেলে।মেয়েটা মামাবাড়িতে।
গার্গী বলতে থাকে “কখন আসবে?কতদিন দেখি নি।আমার মনখারাপ”।
রঞ্জন হাসে।বলে “একেবারে পাগলী একটা”।
ব্রাঞ্চে আটদিন পর জয়েন করলো রঞ্জন।ধনঞ্জয় বলল “অনেক কাজ জমা হয়ে আছে রঞ্জনদা”।
রঞ্জন বলে “হ্যাঁ ।আজ সব সারতে হবে”।
মাথা গুঁজে কাজ করছে রঞ্জন।ফোন এসেছে গার্গী র।একবার ফোনটা ধরে বলল “এখন কথা নয়।অনেক কাজ বাকি”।
গার্গী অস্থির হয়ে যায়।মেসেজ পাঠায় “I Love you”
তণিমার জন্য কষ্ট হয় রঞ্জনের।বড় জেদী আর একগুঁয়ে।তবে সন্তানদের খুব ভালো করে মানুষ করেছে ও।ব্যাঙ্কের বদলির চাকরি।একা হাতে সব সামলেছে।তণিমার মাথায় হাত দিল রঞ্জন।বলল “এখন কেমন বোধ করছো?”
তণিমা বলল “ভালো।তোমার ফোনটা দাও।একটা ফোন করবো”।
রঞ্জন ফোনটা এগিয়ে দেয়।তারপর পাশের ঘরে গিয়ে বসে।
এদিকে তণিমা মেসেজ দেখতে থাকে।চোখে পড়ে আই,লাভ ,ইউ।মাথাটা টলতে থাকে।এরমধ্যেই হাজির তণিমার বান্ধবী সুলতা।
সুলতা তণিমা কে হাসাতে চেষ্টা করে।বলে “ভাগ্য করে স্বামী পেয়েছিলি।খুব সেবা করছে।নৈলে এখন তো বেশিরভাগ স্বামী পরকীয়া তে আসক্ত”।
তণিমা বলে “স্বামী পরকীয়া তে আসক্ত কী করে বোঝা যায়?তুই জানিস?”
সুলতা বলে যেতে থাকে “আচরণের পরিবর্তন আসে।সাজগোজ করতে থাকে।এইসব।”
তণিমার সন্দেহ গাঢ় হয়।রঞ্জনের মধ্যেও আজকাল এসব প্রত্যক্ষ করেছে ও।বলল “এটা তো একটা অপরাধ।তাই না?”
সুলতা বলে “জানিস তণি।এটা বর্তমানে একটা সামাজিক সমস্যা”।
মেসেজটা পাগল করে দিয়েছে তণিমা কে।দিনরাত অশান্তি চলছে রঞ্জনের সাথে।রঞ্জন কী করবে বুঝতে পারে না।মনে মনে ভাবল “গার্গী কে সব জানাবে।আর নয়।সরে আসতে হবে ওকে।”
সেদিন ব্যাঙ্কে আসার সময় ফোনটা নিয়ে নিল তণিমা।বলল “আজ ফোন দেবো না”।
ফোন না নিয়ে বাইরে এল রঞ্জন।খুব দেরি হয়ে গেছে।ট্রেন মিস।সর্বনাশ!পরের ট্রেনের জন্য নয়।এই ট্রেনে রঞ্জনকে না দেখলে গার্গী যদি ফোন করে।হা ঈশ্বর!
যা ভেবেছিল তাই।গার্গী ফোন করেছিল।চুপ করে আছে তণিমা।এত চুপ যে রঞ্জন অস্থির হয়ে উঠছে।তারপর ঠিক আটটা যখন একটা গোঙানির আওয়াজ।ছুটে গেল রঞ্জন।বলল “কী হয়েছে তণি?এমন করছো কেন”?
তণিমা বলে “তুমি আমাকে ভালোবাসো না।তাই আমি ঘুমের ওষুধ গুলো,,,,”।
বলেই অজ্ঞান হয়ে গেল তণি।আর রঞ্জন।কী করবে ও।কোলে তুলে নিল তণিকে।সোজা নার্সিং হোম।ওখানে কর্তৃপক্ষ বলল “এ তো অন্য কেস।এখানে ভর্তি নেবো না”
অগত্যা সরকারি হাসপাতালে।
সেদিনের সেই ভয়ঙ্কর রাত এর আতঙ্ক রঞ্জনের মনে গেঁথে আছে।দূরে বদলি নিয়েছে রঞ্জন।আর ফোন করেনি গার্গী কে।
কত রাত গার্গী র জন্য কেঁদেছে রঞ্জন।হয়ত পাগলের মতো গার্গী ও খুঁজেছে রঞ্জনকে।এই মুক্তিতেই থাক ওদের চিরকালের বন্ধন।
–~০০০XX০০০~–