“ক্লিওপেট্রা”
✍ ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়
(অন্তিম পর্ব)
ভূবণমোহিনী ক্লিওপেট্রা। অসীম ক্ষমতাধর। ক্ষমতার বিশেষ উপাদান বুদ্ধি আর চাতুরী। কথা প্রসঙ্গে জেনে নিলেন সামিরকে অক্টোভিয়ান বন্ধু ভাবে। এই তো সুযোগ।মুরসিয়া সাহায্য করলে রাণীকে। একটি দামী পোশাক আর অলংকার নিয়ে কার্পেট এর মধ্যে আত্মগোপন করলেন।সঙ্গে নিলেন তীক্ষ্ম ছুরিকা। সময়ে কাজে লাগবে।নীতিপরায়ণ অক্টোভিয়ান। তাকে নিয়েই চিন্তা।
ক্লিওপেট্রার চাতুরী বুঝতে পারেনি সামির। সহৃদয় এই যুবক ব্যবসা বাণিজ্যে বেশ প্রতিপত্তি করেছে। কার্পেটের চাহিদা এই অঞ্চলে প্রচুর। পারস্যের কার্পেট হলে কথাই নেই। এরসাথে মশলা নিয়ে আসেন ভারত থেকে। বিশেষ করে দারুচিনি আর গোলমরিচের।
ঈজিপ্টাস এর মধ্য দিয়ে চলেছেন রাণী ভিনদেশী যুবকের সাথে। বুঝে গেছেন এই যুবক প্রথম দেখাতেই তাকে ভালোবেসেছেন। বেশ সুঠাম শরীর আর হাসিমুখ। ওডিসি তে নীলকে ঈজিপ্টাস বলে। রাণীও তাই বলেন।
পণ্যসম্ভার নিয়ে রোমে পৌঁছালে বন্ধুকে আলিঙ্গন করলেন অক্টোভিয়ান। সামির ওকে ডাকনাম গাইয়াস বলে ডাকে।সিজারের বোনের ছেলে। জন্মের পর মাতৃহারা। নিঃসন্তান জুলিয়াস আর পম্পেইয়া পালন করেছে ওকে। রোমের পরবর্তী সম্রাট। ওর মুখে দেশ বিদেশের কথা শোনেন ।
কার্পেটের ভিতর প্রেয়সীর মুখটা যদি একবার দেখা যেত ।একটু অন্যমনস্ক সামিরকে দেখে অক্টোভিয়ান মজা করতে লাগলেন ।সামির কিন্তু পুরো ব্যাপারটা চেপে গেলেন বন্ধুবরের কাছে ।যে কার্পেটের মধ্যে প্রেয়সী আছে সেই গাঁটটাকে রাখলেন জুলিয়াস ভিলায় ।নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বেষ্টনীতে ।আর তারপর চলে গেলেন অক্টোভিয়ান এর প্রাসাদে ।
রাত্রি গভীর হল ।চারিদিক নিথর নিথর ।কার্পেট ছিন্ন করে বের হলেন মিশর সম্রাজ্ঞী ।পোশাক বদলে অলংকার এ সু সজ্জিত হয়ে চললেন প্রেমিকের কাছে ।সুপ্ত একটা বাসনা ।মিশরের সাথে রোম ।তিনিই হবেন স্বপ্নকল্পনার অধিশ্বরী ।সকাল হলে সামির দেখলো চিড়িয়া উড় গ্যয়ি ।প্রমাদ গুনলেন ।তবে কী ভুল হয়ে গেল ।ষড়যন্ত্রের শিকার হলেন ।ছুটে গেলেন বন্ধুর কাছে ।এখন ই তাকে সব কথা জানাতে হবে ।
মধ্যবয়সী বীর জুলিয়াস ।এদিক ওদিক ঘুরতে ঘুরতে ঠিক খুঁজে নিলেন তাকে ।প্রাসাদের অভ্যন্তরে রোমান স্থাপত্য ।এ যেন আভিজাত্য ।কংক্রীটে তৈরি প্রাসাদ জানান দেয় কত সমৃদ্ধ এই রোম ।আর জুলিয়াস ।সামান্য এক সেনানায়ক থেকে এখন বিশাল সাম্রাজ্যের অধীশ্বর ।
স্পেন থেকে ব্রিটেন সব রোম সাম্রাজ্যের দখলে ।আবার ওদিকে গল থেকে সিরিয়া ।এই বীরত্ব উপাসনা করলে পাওয়া যায় ।প্রাসাদে বিচরণ কালে দেখা হল এক দাসীর সাথে ।স্বভাবে চপল এই মেয়েটির নাম ফুলভিয়া ।ছুট্টে এসে বললে “তুমি নতুন দাসী নিযুক্ত হলে নাকি ?
ক্লিওপেট্রা হেসে বললেন “হ্যাঁ ।সম্রাট জুলিয়াসের খাস ঝি আমি”
ফুলভিয়া সহজ সরল মেয়ে ।সত্যি ভাবলে সবকিছু ।ক্লিওপেট্রা বললে “আমি তো নতুন ।আমাকে দেখিয়ে দাও সবকিছু” ।
ফুলভিয়া ক্রীতদাসের মেয়ে ।ওর বাবার নাম দারিয়াস ।সেনাবাহিনী তে কাজ করতো ওর বাবা ।যুদ্ধবন্দী হয়ে রোমে আসে ।সাথে ওর মা আর ছোট্ট ফুলভিয়া ।জাহাজে দাঁড় টানার কঠিন শ্রমে নিযুক্ত করা হয়েছিল ওর বাবাকে ।একদিন ওখানেই মারা গেলে মৃতদেহ জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয় ।বাবাকে ভীষণ ভালোবাসতো মা ।বাবা নেই শুনে শোকে মূহ্যমান হয়ে মারা যায় ।রাজপুত্র অক্টোভিয়ান ফুলভিয়া কে প্রাসাদে নিয়ে আসেন ।খুব ভালোবাসেন ফুলভিয়া কে ।মহারাণী রাজমাতা পম্পেইয়ার সেবা করে ফুলভিয়া ।
ফুলভিয়া র থেকে কৌশলে রাজপরিবারের অভ্যন্তরের অনেক কথাই জানা গেল ।এরপর ফুলভিয়া নিয়ে গেল জুলিয়াস এর কাছে ।মুখে ওড়না ঢাকা ক্লিওপেট্রা কে আড়চোখে একবার দেখলেন সম্রাট ।
ফুলভিয়া চলে যাবার পর ক্লিওপেট্রা সম্রাট কে সম্বোধন করে বললেন আমি আপনার পাণিপ্রার্থী ।এত মধুর কণ্ঠ ।এ কোনো সাধারণ দাসী হতে পারে না ।চকিতে তাকালেন ।সেই চোখ!অস্ফুটে বলে উঠলেন ক্লিওপেট্রা ।
অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন দুজন দুজনের দিকে ।দৃষ্টি যেন সরে না ।এতদিন এই মরুভূমি হৃদয় এমন মরুদ্যানের আকাঙ্ক্ষা করেছে ।এ এক অনির্বচনীয় আস্বাদন ।এ প্রেম ভাসিয়ে নিয়ে যায় ।এমন আগুনে পতঙ্গ উড়ে গিয়ে ঝাঁপ দেবেই ।এ তো দেবী ।কতক্ষণ এইভাবে কেটে যায় ।কোনো কথা নেই কারো মুখে ।গভীর প্রেমে কথা থাকে কি
পম্পিকে উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছেন সিজার ।অন্যের উনানে নিজের রুটি সেঁকে নেওয়ার ফলশ্রুতি কাটা মুন্ডু ।তবে অক্টোভিয়ান কে সমীহ করেন ।তাই ক্লিওপেট্রার সাথে প্রেমালাপ এখানে সুখকর হবে না ।সুড়ঙ্গপথে প্রেয়সীকে নিয়ে চলে এলেন একেবারে কায়রো ।নীলনদের বজরাতে দুজনে ।একেবারে মোহাবিষ্ট ।
নীলনদের স্বচ্ছ জল ।পাথরের উপরে প্রবাহিত এ নদে শ্যাওলা গ্রাস করে না ।আজ চাঁদের হাসি আর বাঁধ ভাঙা আনন্দে পৃথিবীর দুই অধীশ্বর অধীশ্বরী ।মধুর কন্ঠে গজল গাইছেন মিশর সম্ভ্রাজ্ঞী ।যুদ্ধ বিগ্ৰহে ক্লান্ত প্রেমিক আকণ্ঠ পান করছেন রসের পেয়ালা ।
জীবনে শেষ বলে কিছু হয় না ।প্রেম সব কিছু নতুন করে দেয় ।সন্ধ্যার ছায়া নামে ।প্রেমিকার আনত মুখে আধো আধো স্বর ভাসিয়ে নিয়ে যায় ।আকাশে তখন দু একটা তারা বলে আমরা চিরকালের সাক্ষী এই প্রেমের ।
ক্লিওপেট্রা সম্রাটকে প্রশ্ন করেন “আপনি আমাকে কতটা ভালোবাসেন ?
প্রেয়সীর প্রশ্নে বিগলিত সম্রাট সিজার উত্তর দেন “জীবনের থেকে বেশি ।আমি ঠিক করেছি তুমি হবে আমার পাটরাণী।”
“তা কী করে সম্ভব ।রোমের আইন বিরুদ্ধ কাজ আপনি কী করে করবেন ?”
মাথা নাড়েন সম্রাট ।”এ নিয়ম আমি মানি না ।পুত্রহীন আমি ।কতদিন ভেবেছি সবকিছু পেয়েও পিতা হতে আমি পারি নি ।তাই তোমার গর্ভস্হ যে সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে সে হবে রোমের রাজা” ।
আবেগে সিজার কে জড়িয়ে ধরেন মিশর সম্রাজ্ঞী ।তাঁর অশ্রুসিক্ত চোখ মুছিয়ে দেন রোম সাম্রাজ্যের অধিপতি ।
“বলেন ভাবী সন্তানের নাম হবে সিজারিয়ান “।
সামির জুলিয়াস ভিলা থেকে অক্টোভিয়ান এর কাছে গেল ।জানালো সব কথা যা ঘটেছে ।বুঝতে বাকি থাকলো না এই নারী ক্লিওপেট্রা ।তবে ফুলভিয়া একটু আগে এক দাসীর কথা বলছিল ।সব অঙ্ক মিলে গেছে ।প্রাসাদের মধ্যে ব্যভিচার ।অসম্ভব ।উদ্ধত তরবারি নিয়ে এগিয়ে গেল প্রাসাদের দিকে ।আশ্চর্য এই নারী ।ক্ষমতা দখলের জন্য যা খুশি করতে পারেন ।
ভিলা থেকে অক্টোভিয়ান কে দেখতে পেয়েছেন ব্রুটাস ।উনি সিজারের ডানহাত বলা যায় ।ক্লিওপেট্রা কে নিয়ে সিজারের চলে যাওয়া তিনি দেখেছেন ।এটাই তো চাই ।পম্পিকে মেরেছে সিজার । এখন শুধুই প্রতিশোধের পালা । অ্যান্টোনি সিজারের সেনাধ্যক্ষ ।রোমের সম্রাট হবার ইচ্ছে আছে তার। তবে পথের বাধা অক্টোভিয়ান ।
ব্রুটাস আর অ্যান্টোনি র ডানা দুটো ছাঁটতে হবে ।প্রতিজ্ঞা করলেন অক্টোভিয়ান ।খবর এল সিজার এখন মিশরে ।ওখানে ক্যালেন্ডারের কাজে গেছেন ।জুলিয়াসের নাম অনুসারে জুলাই আর তার নাম অনুসারে আগস্ট মাসের নাম হয়েছে ।খুশি হলেন ।সম্রাট তাকে ভালোবাসেন ।তবে ব্রুটাস কে নজরে রাখা প্রয়োজন ।
জুলিয়াস আর ক্লিওপেট্রার অনির্বচনীয় প্রেমের সাক্ষি থাকলো রোম,মিশর,সুদান, উগান্ডা। আকাশে বাতাসে ধ্বনিত তাদের নিয়ে তৈরি নানা গল্প। ইতিমধ্যে সিজারিয়ানের জন্ম হয়েছে। আনন্দে অভিভূত হয়ে সিজার সোচ্চারে ঘোষণা করেছেন সিজারিয়ানের পিতা তিনি ই।ভেনাসের মন্দিরে ক্লিওপেট্রার মূর্তি স্থাপন করেছেন ।
রোম যেদিন গ্ৰীস জয় করেছিল সেদিন যদি গ্ৰীসের সংস্কৃতি আত্মসাৎ করতো তবে এই গৃহযুদ্ধ হত না। এত বৈভব,এতপ্রাচুর্য, তবু শুধু লড়াই আর লড়াই। যুদ্ধবন্দী দের দাস বানানো মানবতার চরম অপমান। স্পার্টাকাসের নামে শ্রদ্ধায় মাথা নীচু হয়ে যায়। এখন নতুন করে দ্বিতীয় পর্বের গৃহযুদ্ধ হয়েছে । ক্লিওপেট্রার উপস্থিতি পরিস্থিতি জটিল করেছে ।অ্যান্টোনি ।আর এক ধূরন্ধর ।একটু নারীপ্রেমী ।একটা মাত্র বোন অক্টোভিয়ার স্বামী ।তা নাহলে কবেই শেষ করে দিতাম। আবার ফুলভিয়ার নরম মনটা নিয়ে খেলছে ।ওকেও বিয়ে করবে । উথাল পাথাল চিন্তা গ্ৰাস করছে অক্টোভিয়ান কে ।
এদিকে মিশরের যাজক বা পুরোহিত সম্প্রদায় সাধারণ মানুষ কে খেপিয়ে তুলেছে। রাণীর এমন আচরণ ও স্বেচ্ছাচারিতা দিনের পর দিন মেনে নেওয়া যাবে না। মাসের পনেরো দিন নীলনদের বজরাতে কাটান তিনি। সিজারের আমণ্ত্রণ এ রোমে গিয়ে বিশেষ অভ্যর্থনা পেয়েছেন ।তবে চোখে পরেছে অ্যান্টোনি ।কী একটা টান হৃদয়ের গভীরে। এবার এই সৈন্যাধ্যক্ষ কে ভীষণ প্রয়োজন ।
রাজত্বের অধিকার নিয়ে দ্বন্দ্বে ব্রুটাসের হাতে নিহত হল সিজার ।চরম অরাজকতা।অক্টোভিয়ান দুর্ধর্ষ হয়ে উঠেছে ।মিশর রোমের করদ রাজ্য ।এই পরিস্থিতির সম্মুখীন রাণী ক্লিওপেট্রা। আঁকড়ে ধরেছেন অ্যান্টোনি কে।
করদ রাজ্য মিশর থেকে কর মুকুব করেছেন অ্যান্টোনি। যেদিন থেকে ক্লিওপেট্রার চোখের দিকে তাকিয়েছেন সেদিন থেকেই ফুলভিয়া, অক্টোভিয়া সকলকেই ভুলেছেন ।আলেকজান্দ্রিয়া র প্রাসাদে তার সর্বক্ষণের যাতায়াত । ক্লিওপেট্রার ভালোবাসা আরো দ্বিগুণ হয়ে গেছে ।কাছে না থাকলেও অ্যান্টোনি র অস্তিত্ব টের পান হৃদমাঝারে ।এ কামনা নয়।ভালোবাসা ।অসহায় এক নারী শুধু অবলম্বন চায় ।
প্রেম তো বারে বারে আসে জীবনে ।কিন্তু ভালোবাসা মহান ।তা শুধু ত্যাগ করতে শেখায় ।বিরহসাগরের দুইকূলে বসে দুটি হৃদয় কেঁদে চলে। রাজকীয় দ্বন্দ্ব সংঘাত পেরিয়ে তিরতির করে বয়ে চলে প্রেম ।যেন ফল্গুনদী ।
অ্যান্টোনি কে বিবাহ করেছেন ক্লিওপেট্রা। যমজ সন্তানের জননী হয়েছেন। তবে রোমের রাণী হ ওয়া তো হল না। অক্টোভিয়ান বীর। কতবার চেষ্টা করেছেন একবার যদি সে চোখের দিকে তাকাতো তবে সে মায়াডোর কাটাতে পারতো না কিছুতেই। যুদ্ধ ক্ষেত্রে অ্যান্টোনি। প্রমাদ গোনেন মহারাণী। তবে কী সব শেষ হতে চলেছে। সিজারের সাথে প্রেমে স্বার্থ ছিল। অ্যান্টোনি র ক্ষেত্রেও তাই ।মিশরের স্বার্থ দেখেছেন ।এতে দোষের কী? তবু অ্যান্টোনি কে মরমে মরমে উপলব্ধি করেন ।
এবার বুদ্ধিমান অক্টোভিয়ান দারুণ বুদ্ধি আঁটলো। যুদ্ধরত অ্যান্টোনি কে খবর দেওয়া হল তার প্রেয়সী আত্মহত্যা করেছে। সরলমতি ফুলভিয়া এই মিথ্যা খবর দিলে অ্যান্টোনি বিশ্বাস করে তরবারি দিয়ে আত্মহত্যা করলেন । আলেকজান্দ্রিয়া তে খবর পৌঁছালো। রাজপ্রাসাদের গুপ্তঘরে প্রচুর মদ্যপান করেছেন। ভুলতে হবে এ বিষজ্বালা। ভেষজ দিয়ে বিষ তৈরি করেছেন। সব যণ্ত্রণা র শেষ হবে এবার ।
ক্লিওপেট্রার অন্তিম মুহূর্তে উপস্থিত আছে মিনার্ভা আর অ্যান্ড্রোমিডা ।দুজনে সন্দেহবশে বিষাক্ত ভেষজ মুখে একটু ছোঁয়াতেই ঢলে পরলো মৃত্যুর কোলে ।এখন কী হবে !অবসাদে আর হতাশায় ভেঙে পরলেন রাণী ক্লিওপেট্রা। মনে পড়ে গেল জ্যোতিষীর কথা। আমেনটাফ। কদিন আগেই তো বলেছেন সাপের কামড়ে মরলে শুভ। কিংবদন্তী হ ওয়া যায় ।ওই তো। পাত্রে ভরা আছে মিশরের বিষধর গোখরো। বার করে আনলেন। ওদের দংশন সব ভুলিয়ে দিচ্ছে ।মিশরের রাণী ক্লিওপেট্রা চলেছেন না ফেরার দেশে। ওই তো। ওখানে চিরবসন্ত। প্রেমে মশগুল হবেন। ওখানে তো ভালোবাসার মানুষ আছে তার। যারা নিয়ম নিগড়ে ঠিক করে প্রেম করতে পারেননি। এবার হবে চিরকালীন অবিচ্ছেদ্য প্রেম।
আদিম প্রবৃত্তি। ইতিহাসের প্রাচীন। যা প্রাগৈতিহাসিক। সব জীবের মধ্যে তা বিদ্যমান। মহারাণী ক্লিওপেট্রার মধ্যেও তা ছিল। জ্যোতিষীর ভবিষ্যৎ বাণী সত্য হয়েছে। কিংবদন্তী তিনি। মানুষ কখন কিংবদন্তী হয়? শুধুমাত্র প্রবৃত্তিসর্বস্ব হলে কি মহাকাল তাকে ঠাঁই দিতে পারতো?
রহস্যময় মিশর। আর তার মতোই রহস্যময়ী তার রাণী ।শুধুই কী উচ্ছৃঙ্খলতা? এর বাইরে কি ছিল না এক নারীর সুগভীর দেশপ্রেম? মিশরকে রোমানদের হাত থেকে বাঁচাতে নিজেকে আত্মাহুতি দিয়েছেন তিনি ।করে জর্জরিত প্রজাদের রক্ষা করেছেন তিনি ।নাকি শুধুই যৌন উত্তেজনা প্রশমন ।আধুনিক যুগের হাতে ন্যস্ত সেই বিচারের ভার।
(সমাপ্ত)