“একটু নস্টালজিক”
–:: রিমা দাস (২০) ::–
শহরতলির গলি জুড়ে দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামে।
জানলার গরাদের ফাঁক দিয়ে এক চিলতে রোদের টুকরো এসে পড়ে শ্বেতপাথরের মেঝেটায়।
আলো- আঁধারিতে দেখি পশ্চিমের আকাশ।
শরতের সাদা মেঘের তুলিতে নীলের ক্যানভাসে কার জানি মুখ ভেসে ওঠে!
কিন্তু কার মুখ?
সে কি সিংহবাহিনী নাকি নিরাকার আল্লাহ্?
নাকি যাবতীয় বেড়াজাল ভেঙে ফেলা দিওয়ানা আশিকের মুখ?
দূরের আকাশের পরিধি বদলে যায় কংক্রিটে, ইমারতে।
শাঁখ বেজে ওঠে গৃহস্থের ঘরে ঘরে।
মাথা নুয়ে যায় শ্রদ্ধায় , ইবাদতে।
দূর থেকে ভেসে আসে আজানের সুর।
অন্ধকার গাঢ় হয়ে ওঠে। জাদুকরের শ্রেষ্ঠ ভেলকিবাজির মতো পশ্চিমী দিগন্তে মিলিয়ে যায় সূর্যাস্তের শেষ নুর।
আকাশের গভীরতায় মৃত পরিজনেরা নক্ষত্র হয়ে জ্বলে ওঠে একে একে,
পার্বত্য উপত্যকার কুটিরে সদ্য প্রজ্জ্বলিত লন্ঠনের মতো।
দরগায় প্রদীপ জ্বলে ওঠে।
সমাধিস্থলে ঝরে পড়ে বেলিফুল, জুঁই।
এক সময় নিভে যায় সমস্ত রোশনি।
পড়ে থাকে শুধুই অন্ধকার, সাকিন, শাশ্বত ।
মধ্যরাতে ধোঁয়ার কুন্ডলীর মতো পাক খেতে থাকে অশরীরি।
তারই নিস্তব্ধতা ভেঙে কুরবানির গান গেয়ে যায় এক মাতৃসাধক।
রাত পেরোলেই মহালয়া।
কানে আসে, “আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জীর….”।
ঠাকুরদালানে শিউলি ঝরে পড়ে।
ধুপ-ধুনোর গন্ধ ভাসে বাতাসে।
এবার চেয়ে নিতে হবে দুয়া।
আগমনীর পদধ্বনি ক্রমশ স্পষ্ট হতে থাকে।
দূর থেকে ভেসে আসে সেই সুর।
মহালয়ার গান আর ভোরের আজান মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।
— ০০ XX oo —